“সংসদের বাইরেও বিরোধী দল থাকতে পারে”

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

জাতীয় সংসদের বাইরেও বিরোধী দল থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়া। রোববার (১৩ জানুয়ারি ২০১৯) ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের ওপর শুনানির একপর্যায়ে তিনি এ কথা বলেন।

এই মামলার চার্জ গঠনের ওপর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, নাইকোর সঙ্গে যে চুক্তি সেটির উদ্যোগ শুরু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল। এরপর বিএনপি সরকার থেকে চুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়। এখন তো আমরা বিরোধী দলে। আমরা বিরোধী দলে আছি বলেই বিপদে পড়েছি।

এ সময় দুদকের বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল প্রশ্ন রেখে বলেন, “আপনারা আবার বিরোধী দল হলেন কবে থেকে? আপনারা এখন বিরোধী দলে নেই।” এর জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, “বিরোধী দল শুধু সংসদের ভেতরে থাকলেই হয় না, সংসদের বাইরেও বিরোধী দল থাকতে পারে। যারা জনগণের অধিকার নিয়ে সংসদের বাইরে কাজ করে তারাই বিরোধী দল। যারা রাজপথে থাকে, জনগণের কথা বলে, মানুষের অধিকারের কথা বলে তারাই বিরোধী দল।”

বেলা ১২টা ২২ মিনিটে খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির করা হয়। এর কিছু সময় পর বিচারক হাফিজুর রহমান এজলাসে বসেন। এরপর খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের ওপর প্রায় দেড় ঘণ্টা শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এই মামলার অন্যতম আসামি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল তখনই নাইকো চুক্তি হয়। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রেখেছি। বলা হচ্ছে, আমার চেম্বার এবং আমি লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ছিলাম, মতামত দিয়েছি চুক্তির পক্ষে। অথচ এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র আমাকে সরবরাহ করা হয়নি। সত্যায়িত অথবা ফটোকপি কোনোটাই আমি পাইনি।

মামলার নথির সত্যায়িত কপি পেতে রোববারই আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে সময় চান ব্যারিস্টার মওদুদ। ঢাকা বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ দিন আসামি তারেক রহমানের বন্ধু বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভুইয়া, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সহকারি সচিব সি এম ইউসুফ হোসেনের পক্ষে শুনানি হয়।

আংশিক শুনানি শেষে বেলা পৌনে দুইটায় আদালত ২১ জানুয়ারি এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। এরপর খালেদা জিয়াকে পুনরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় কানাডিয়ান কোম্পানী নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম মামলাটি করেন।

পরে ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

ফাইল ছবি

সূত্র : সমকাল, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

Similar Posts

error: Content is protected !!