মোজাম্মেল হক, কটিয়াদী ।।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরুর প্রথম দিনেই ছিলো উপচেপড়া ভীড়। এদের মধ্যে যেমন রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষনেতারা, তেমনই আছেন তৃণমূলে অবদান রাখা সারাদেশের নেত্রীরাও।
এছাড়াও আছেন ইতোপূর্বে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হওয়া সাবেক বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যও। বাদ যাননি সংস্কৃতি ও বিনোদন জগতের তারাকারাও। এরই ধারাবাহিতায় কিশোরগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ফরম কিনতে লাইনে দাঁড়ান তানিয়া বর্ণালী।
চোখে মুখে অশ্রুভেজা ভাব, কিনতে পারবেন কি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন? সবার মতো দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষার প্রহর গুনে অবশেষে দেখা মেলে মনোনয়ন নামের সেই কাঙ্খিত ফরমটির। তার মনোনয়ন ফরমটির নম্বর ৬১৪।
ছোটবেলা থেকেই তানিয়া স্বপ্ন দেখতেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলার। এই স্বাধীন দেশের আইনসভার একজন সদস্য হবার, স্বপ্নটা ছিলো ঠিক যেনো নীল আকাশচুম্বির মতন। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। এই স্বপ্নবান কিশোরীর বাবা যে একজন স্কুলশিক্ষক।
সংস্কৃতিমনা এই কিশোরীকে স্বপ্ন সবসময়ই তাড়া করতো। তার স্বপ্নের সেই বাংলার বীর বঙ্গবন্ধু তাইতো ছাত্রজীবনেই স্কুল ব্যাগকে ‘সততা ব্যাগ’ নাম দিয়ে জমাতে শুরু করেন মনোনয়ন ফরম কেনার জন্য টাকা। অনেক অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে ধরা দেয় সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর দল নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। তার ব্যাগে জমাকৃত টাকা গুনতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার বিভিন্ন টিউশন ফি থেকে প্রাপ্ত টাকার অংক দাঁড়ায় বিশ হাজার টাকা। বাকি টাকা তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া ঈদি বাবদ দশ হাজার টাকাসহ ত্রিশ হাজার জোগাড় করে কেনেন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন ফরম।
আওয়ামীলীগের সেই মনোনয়ন ফরমটি যেন তার স্বপ্নের পৃথিবীর প্রথম ধাপ। আকাশছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে তানিয়া এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস রেখে দেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহযোগিতা কামনা করে সেই স্বপ্নবান কিশোরী।