অষ্টগ্রাম উপজেলায় মনোনয়ন লাভে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটত না-কাটতেই কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগে এই দৌড়ঝাঁপ চোখে পড়ার মতো। দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা এখন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্য ও যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে কেউ কেউ হাইকমান্ডের মন পেতে বাড়তি যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছেন।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যে কয়েকজন উঠেপড়ে নেমেছেন। তাঁদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল হক, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোশতাক আহমেদ, ঢাকার খিলগাঁও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফজলুল হক হায়দারী অন্যতম। তাঁদের ঘনিষ্ঠজনেরা নানাভাবে তাঁদের প্রার্থিতার বিষয়টি সামনে আনছেন। বিশেষ করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই চারজনের প্রার্থিতার বিষয়ে সরব আছন তাঁদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা।

ওই চারজন ছাড়া আরও যাঁরা প্রার্থী হতে আগ্রহী তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুক নাজিম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ শাহজাহান।

এদিকে বিএনপি বা অন্য কোনো দলের নেতা-কর্মীরা নীরব। তবে প্রার্থিতার বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান আলোচনায় রয়েছেন। সৈয়দ ফাইয়াজ কয়েক বছর আগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন।

হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৪। এই আসন থেকে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাধীনতাপূর্ব সময় থেকে নির্বাচন করছেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর টানা তিনবার সাংসদ আছেন তাঁর ছেলে রেজওয়ান আহম্মদ। হাওরে আওয়ামী রাজীতির একক নিয়ন্ত্রক সাংসদ রেজওয়ান আহম্মদ। বড় সমস্যায় এখনো হাওরবাসী রাষ্ট্রপতিকে ভরসা মনে করেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এরই মধ্যে দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে সরব থাকায় সমস্যা সমাধানে শেষ ভরসা বঙ্গভবনকে মনে করা হচ্ছে।

দলের একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, দলীয় টিকিট বাগিয়ে আনতে কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী এখন বঙ্গভবনের সঙ্গে বাড়তি যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টায় আছেন। কয়েকজন নানা অছিলায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন। তাঁদের মধ্যে শহীদুল হক, মনিরুজ্জামান ও মোশতাক আহমেদ অন্যতম। তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে ওই মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে প্রচার করেছেন। সেসব ছবিতে কর্মী-সমর্থকেরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য লিখছেন।

তবে শহীদুল হক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও বর্তমান সাংসদ রেজওয়ান আহম্মদের বাড়তি আনুকূল্য পেয়ে আসছেন। মূলত তাঁদের আনুকূল্য নিয়ে সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন শহীদুল হক। মোশতাক ও মনিরুজ্জামান এর আগে দলীয় আনুকূল্য চেয়েও পাননি। সভাপতি ফজলুল হক হায়দারী প্রবীণ রাজনীতিবিদ। দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফজলুলের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে শহীদুলের দূরত্ব বেড়েছে। এবারের নির্বাচনে দলীয় টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে দুই নেতার দ্বন্দ্ব বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মনিরুজ্জামান বলেন, “গত বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি ২০১৯) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে এসেছি। প্রার্থিতার বিষয়ে তাঁর কাছ থেকে দোয়া চেয়েছি। তিনি মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন।” মোশতাক বলেন, “দেখা করে রাষ্ট্রপতির দোয়া নিয়ে এসেছি।” শহীদুল হক বলেন, “ঢাকায় গেলে সাধারণত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করি। কিছুদিন আগেও তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি এবং নির্বাচন বিসয়ে তাঁর পরামর্শ চেয়েছি।”

সূত্র : প্রথম আলো, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

Similar Posts

error: Content is protected !!