আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
বাংলাদেশে ইজতেমা নিয়ে বিরোধের আপাতঃ অবসান হয়েছে এবং আগামী মাসে একটি ইজতেমা করতে সম্মত হয়েছে তাবলীগের বিবদমান দু’পক্ষ। সচিবালয়ে তাবলীগ জামাতের বিবদমান দু’পক্ষকে নিয়ে এক বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী যৌথভাবে জানিয়েছেন যে, এবার ইজতেমা একটাই হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, “আজকের সভার পর ইজতেমা একটাই হবে। কোনো বিভক্তি হবে না। তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের সাথে এটা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে”।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন যে, যাকে নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছিলো ভারতের মাওলানা সাদ কান্দালভী এবারের ইজতেমায় আসছেন না।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি ২০১৯) ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহর সাথে বৈঠকের ইজতেমার সময়সূচী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি এতটাই বিতর্কিত হয়ে গেছে যে আমরা কিছু না বললে এটা পরিস্কার হচ্ছে না। হাইকোর্টে রিট পিটিশন পর্যন্ত গেছে। সেখানে কথাবার্তা ভালো আসেনি”।
এতোদিন ধরে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষ সরকারের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শর্ত দিয়েছিলেন তিনি এ বৈঠকটিতে দু’পক্ষকেই থাকতে হবে। সে শর্ত মেনেই তারা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।
দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণ
বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের ভেতরে দু’টি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরে- যা সহিংস রূপ নেয় গত ডিসেম্বরে সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে। এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে আছেন তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতীয় মোহাম্মদ সাদ কান্দালভি।
এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই ঢাকার টঙ্গীতে এবার বিশ্ব ইজতেমা হতে পারেনি। তাবলীগ জামাতের একটি গ্রুপ ১১ জানুয়ারি থেকে ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গত নভেম্বরেই তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপকে নিয়ে বৈঠক করেন- যেখানে ওই তারিখে ইজতেমা না করার সিদ্ধান্ত হয়।
বেশ কিছুদিন ধরেই মি. কান্দালভি তাবলীগ জামাতে এমন কিছু সংস্কারের কথা বলছেন- যা এই আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। সাদ কান্দালভি বলেন, “ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়”- যার মধ্যে মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ড পড়ে বলে মনে করা হয়।
কিন্তু তার বিরোধীরা বলছেন, সাদ কান্দালভি যা বলছেন- তা তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ইজতেমায় অংশ নেবার জন্য সাদ কান্দালভি ঢাকায় আসলেও ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি। তিনি কাকরাইল মসজিদে অবরুদ্ধ ছিলেন।
সাদ কান্দলভির অনুসারীরা বলছেন, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতারা সাদ কান্দালভির বিরুদ্ধে সক্রিয়। কিন্তু হেফাজতের নেতারা এ অভিযোগ সরাসরি স্বীকার করেন না।
সূত্র : বিবিসি বাংলা