শামীম আল মামুন ।।
কোরিয়ার আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বর্তমানে কোরিয়ায় ৯ লক্ষ ৪০ বিদেশী শ্রমিক রয়েছে। ৩% প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে ২০১৮ সালে ১২ লক্ষ ৭০ হাজার, ২০২০ সালে ১৩ লক্ষ ৪০ হাজার ও ২০৩০ সালে ১৮ লক্ষ ২০ হাজার বিদেশী শ্রমিকের প্রয়োজন পরবে। বর্তমানে কোরিয়াতে ইপিএস-এর আওতায় ১৭টি দেশ থেকে শ্রমিক আনা হয়। বাংলাদেশ থেকে ২০০৮ থেকে শ্রমিক আসা শুরু করে। ব্যাপক সম্ভাবনা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে কিছু কারণে আশানুরূপভাবে শ্রমিক আমদানি বাড়েনি। কারণগুলোর অন্যতম হলো অতিলোভের কারণে ঘন ঘন কর্মস্থল পরিবর্তন, কোরিয়ান খাবারের প্রতি অনীহা ও শারীরিক ফিটনেসের অভাব। নিচের পরিসংখ্যান দেখলে বুঝা যাবে বাংলাদেশের অবস্হান কোথায়। এই সমস্যাগুলোর কারণে বাংলাদেশের শ্রমিকের প্রতি কোরিয়ান মালিকদের আগ্রহ হ্রাস পাচ্ছে। এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারলে এবং কোরিয়ায় যারা আছেন তারা যদি দেশের ভাবমূর্তি ভালো করতে পারেন; তবে অবশ্যই বাংলাদেশী শ্রমিকের প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আশাব্যঞ্জক সফলতা আসবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশী শ্রমিকদের কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। বাংলাদেশিরা কর্মঠ ও কোরিয়ান ভাষা সহজে আত্মস্থ করতে সক্ষম। তাই যে বিষয়গুলো আমাদের শ্রমিক রফতানিতে অন্তরায়, সেগুলো শুধরে নিতে পারলে বাংলাদেশি শ্রমিকের চাহিদা অনেক গুণে বৃদ্ধি পাবে কোরিয়াতে।
অভিবাসনে কোরিয়ার ইতিবাচক সাড়া
দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার রেকর্ড পরিমাণে কমে যাওয়ার দরুন সম্ভাব্য জনসংখ্যা সংকট এড়াতে অভিবাসনকেই সবচেয়ে কার্যকর বিকল্প হিসেবে দেখছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। একই কারণে দেশটির কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীতে আশু ধস ঠেকাতেও বিদেশিদের কোরিয়ার প্রতি আকৃষ্ট করতে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ দিছেন তারা।
কোরিয়া সরকারের ভাষ্যমতে, দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৫ কোটি ১০ লাখ যা আগামী ২০৩০ সাল থেকে কমতে শুরু করবে। আর দেশটির ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর পরিমাণ আগামী দু’এক বছরের মধ্যেই হ্রাস পাওয়া শুরু হবে। ২০৬০ সাল নাগাদ কোরিয়ার জনসংখ্যা ৪ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য সংকট প্রশমনে তাই অভিবাসন কার্যক্রম আরো জোরদার করার চিন্তা করছে কোরিয়ান সরকার।
লেখক : শামীম আল মামুন, কোরিয়া প্রবাসী