চূড়ান্ত সনদ পেল কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনকে চূড়ান্ত সনদ প্রদান করেছে। কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের দুই পাশে ৯১ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর এই ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপ এই জোন প্রতিষ্ঠা করছে।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুসাব্বির আহমাদের হাতে চূড়ান্ত সনদ তুলে দেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নিটল-নিলয় গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. ফারুক হাসান, নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভারতের বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটা মটরস নিটল-নিলয় গ্রুপের সাথে যৌথ উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনে টাটা ব্র্যান্ডের মোটরযান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে টাটা মটরস এই খাতে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। পর্যায়ক্রমে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো হবে। এছাড়া আরো কয়েকটি দেশি-বিদেশী প্রতিষ্ঠান এই জোনে কৃষিভিত্তিক খাদ্য এবং বেভারেজ, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, তথ্য প্রযুক্তি এবং টেলিযোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ আগ্রহ দেখিয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনের উদ্দ্যোক্তাগণ তাদের ব্যবসায় সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে সফলভাবে বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে শিল্পে অবহেলিত হাওরাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জোনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিটল-নিলয় গ্রুপকে অভিনন্দন জানিয়ে পবন চৌধুরী বলেন, “কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনে টাটা মটরসের বিনিয়োগের ফলে মোটরযান তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে নতুনভাবে পরিচিতি পাবে। এতে অন্যরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন।” তিনি মনে করেন কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন কৃষিনির্ভর হাওরাঞ্চলের অনগ্রসর এলাকার জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

তিনি জানান, কিশোরগঞ্জ জোন সম্পূর্ণরুপে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করলে ৫ বছরের মধ্যে ৫ হাজার লোকের সরাসরি এবং ২০ হাজার মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, নিটল-নিলয় গ্রুপ বিগত ৩৩ বছর ধরে মটরযান ও সংযুক্তি ও বাজারজাতকরণ, মটরসাইকেল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ, সিমেন্ট, পেপার, ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছে তা এই জোন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আরো বেগবান হবে।

তিনি বলেন, টাটা ব্র্যান্ডের মোটরযান তৈরির লক্ষ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে ইতোমধ্যে আমদানি করা হয়েছে এবং এসব যন্ত্রপাতি জোনে পৌছে গেছে। পাশাপাশি কারখানা অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। আগামী ৫ বছরে এই জোনে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।

পণ্য পরিবহনসহ অন্যান্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে কিশোরগঞ্জ জোনটি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। জোনটি ভৈরব-কিশোরগঞ্জ ১শ’ ফুট মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। জোনের নিজস্ব রেল লাইনটি গচিহাটা রেল স্টেশন পয়েন্টে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ লাইনে যুক্ত আছে এবং আশুগঞ্জ ও ভৈরব নদীবন্দর থেকে জোনের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার।

এর আগে আরো ৮টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল চূড়ান্ত সনদ পেয়েছে। এই ৯টিসহ মোট ১৯ প্রতিষ্ঠানকে প্রাক-যোগ্যতা সনদ প্রদান করা হয়েছে। বাসস

Similar Posts

error: Content is protected !!