“আদ্রিয়ান রাবিওতকে কয়েদি করে রেখেছে ক্লাব পিএসজি!”

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

সন্তানের কষ্ট সবচেয়ে ভালো বোঝেন মা। আদ্রিয়ান রাবিওতের মা ভেরোনিক রাবিওতও বুঝতে পারছেন পিএসজিতে ছেলে তার ভালো নেই। দুর্বিসহ কষ্টের মধ্যদিয়ে পার করছেন প্রতিটি দিন। শুধু কষ্ট বললে কম বলা হয়। ভেরোনিক রাবিওতের অভিযোগ, পিএসজি তার ছেলেকে রীতিমতো কয়েদি বানিয়ে রেখেছে। মানে রাবিওত এখন পিএসজিতে জেলখাটা আসামি!

রাবিওতের সঙ্গে ক্লাব পিএসজির এই তিক্ততার মূলে বার্সেলোনা! ফ্রান্সের এই তরুণ মিডফিল্ডারকে যেকোনো মূল্যে পেতে চাইছে বার্সা। ক্লাব পিএসজিকে রাজি করাতে নেমে কাতালান ক্লাবটি বেছে নেয় কালো পথ। তলে তলে ফুসলাতে থাকে রাবিওতকে। উসকানি পেয়ে রাবিওতও স্বপ্নের বার্সেলোনায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। বারবার ফিরিয়ে দিয়েছেন পিএসজির চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব।

এমনকি ক্লাব পিএসজির বিরুদ্ধে বিদ্রোহও শুরু করে দেন তিনি। অবাধ্য রাবিওতের আচরণে ক্ষুব্ধ হলেও পিএসজি তাকে ছেড়ে দেয়নি। বরং পিএসজি বেছে নেয় শাস্তির পথ। পান থেকে চুন খসলেই ২৩ বছর বয়সী তরুণের ওপর নেমে আসে শাস্তি। গত অক্টোবরে যেমন, দাদী ও বাবা মারা যাওয়ায় দলের সঙ্গে কাতার সফরে না যাওয়ায় জরিমানা করা হয় রাবিওতকে! জরিমানা করা হয় দেরি করে টিম মিটিংয়ে উপস্থিত হওয়ার কারণেও।

পিএসজিতে দেরির জন্য জমিরানার বিধান অবশ্য সবার জন্যই প্রযোজ্য। এই তো গত শুক্রবার কোচের জরুরি মিটিংয়ে মাত্র কয়েক মিনিট দেরি করায় দলের অন্যতম সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপেকে জরিমানা করা হয় ১ লাখ ৮০ হাজার ইউরো! শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য জরিমানাটা মানানসই। কিন্তু দাদী ও বাবার মৃত্যুর পর ক্লাবের সঙ্গে সফর না করায় শাস্তিটা অমানবিকই। এই বিষয়টিই বেশি মানতে পারছেন না রাবিওতের মা।

অবাধ্য হওয়ায় রাবিওতকে মানসিক শাস্তিও দিয়ে যাচ্ছে পিএসজি। কোচ টমাস টুখেল এ মৌসুমের বেশির ভাগ ম্যাচেই প্রতিভাবান এই মিডফিল্ডারকে বসিয়ে রেখেছেন বেঞ্চে। এমনকি অ্যাওয়ে ম্যাচগুলোতে রাবিওতকে দলের সঙ্গে নেননি, এরকম ঘটনাও ঘটছে। অনুশীলনেও রাবিওতকে এড়িয়ে চলা হচ্ছে। মানে অন্যরা সবাই যখন দলবেঁধে অনুশীলন করছেন, রাবিওতকে তখন অনুশীলন করতে হচ্ছে একাকী। হজম করতে হচ্ছে ক্লাব সমর্থকদেরও দুয়ো, বিদ্রুপও।

সব মিলে পিএসজিতে অস্থির সময়ই পার করছেন ২৩ বছর বয়সী তরুণ। আগামী জুনেই শেষ হতে যাচ্ছে পিএসজির সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদ। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার ভবিষ্যতের বিষয়টি অনিশ্চিত। মৌসুম শেষে স্বপ্নের বার্সেলোনায় যাবেন, নাকি চুক্তি নবায়ন করে পিএসজিতেই থেকে যাবেন, কোনো কিছুই সুরাহা করা হয়নি।

অবশ্য চুক্তি নবায়ন না করার দায়টা তারই। বার্সার ডাকে পাগল হয়ে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের কথা ভাবছেনই না তিনি। মৌসুম শেষে তার এই জেদ হয়তো পূরণ হবে। কারণ, চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তিনি হয়ে যাবেন স্বাধীন। পিএসজির করার থাকবে না কিছুই। যেখানে ইচ্ছা যেতে পারবেন রাবিওত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বার্সেলোনার আগ্রহটা তখন এরকম থাকবে তো?

একদিকে ক্লাবের চাপ। অন্যদিকে নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তা। তরুণ রাবিওতের কষ্টটা অনুমান করাই যায়। ছেলের এই করুণ পরিণতি দেখে যেন বুকটা ফেটে যাচ্ছে মা ভেরোনিক রাবিওতের। ফ্রান্সের সবচেয়ে প্রভাবশালী দৈনিক লেকিপকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি তাই ছেলের এই কষ্টের দায়টা চাপিয়েছেন ক্লাব পিএসজির ঘাড়ে।

অভিযোগ করেছেন, তার ছেলেকে আসামি বানিয়ে রেখেছে পিএসজি, “আমার ছেলে এখন পিএসজিতে বন্দী। যখন তার দাদী ও বাবা মারা যায়, তখন দলের সঙ্গে কাতারে সফরে না যাওয়ায় তাকে জরিমানা করা। পিএসজিতে সে আসলে জিম্মি।”

সূত্র : পরিবর্তন

Similar Posts

error: Content is protected !!