ধামইরহাটে জমি জবরদখলের চেষ্টায় ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি ।।

নওগাঁর ধামইরহাটে জমি জবরদখলের চেষ্টায় অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বাদীর এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালে চৌঘাট মৌজাস্থ্য কাগজকুটা গ্রামে স্থানীয় সিরাজুল হক সিদ্দিকী বিধি মোতাবেক ভূমি পত্তন গ্রহণ করে এবং ১৯৭৭ সালের ৫ আগস্ট ১.০৪ একর জমি একই গ্রামের আকতার হোসেন ও তার পুত্র মোশারফ হোসেন ওরফে মিস্টার এর নিকট কবলা দলিল সম্পাদন করে দেন।

সেই থেকে অদ্যাবধি ভোগ-দখলে থাকাকালে বস্তাবর (কাগজকুটা) গ্রামের মফিজ উদ্দিন ও মফিজ উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে ছোট বাবুসহ স্থানীয় কয়েকজন উক্ত জমিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জবরদখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় জমির মালিক মোশারফ ওরফে মিস্টার আদালতে উক্ত জমির বিরুদ্ধে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে আদালতের মাধ্যমে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারীর আবেদন করেন।

এমন সময় মফিজ উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর গং স্থানীয় কিছু আদিবাসীকে সম্পৃক্ত করে ওই জমিতে অস্থায়ী কুড়েঘরের বসতবাড়ি নির্মাণ করলে চলতি মাসের ২১ মার্চ ধামইরহাট থানায় জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে ছোটবাবু ও তার বাবা মফিজ উদ্দিনসহ ১৬ জনের নামে জমি জবর দখলের মামলা করে মিস্টার হোসেন, মামলা নং-১১।

এর প্রেক্ষিতে পুলিশ পিতা-পুত্র মফিজ উদ্দিন ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করে। এমতাবস্থায় উক্ত জমিতে ২৪ মার্চ রাতে কে বা কাহারা অগ্নিসংযোগ করে প্রায় ৩০/৩৫টি অস্থায়ী ঘর ভাংচুর ও কিছু ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।

এ জমির মালিক মোশারফ হোসেন ওরফে মিস্টার বলেন, কিছু মুসলমান কয়েকজন আদিবাসীদের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে আমার জমি জবরদখলের চেষ্টা চালিয়েছে, যেখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে, সেখানে কিভাবে তারা বেআইনীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে, এখন মামলা হওয়ায় তারা নিজেরা বাঁচতে নিজেদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে।

জবরদখলে যাওয়া ভূমিহীন শিল্পী ও কল্পনা রানী জানান, “রাতের বেলায় হামলা চালিয়েছে, আমরা কাউকে দেখতে পাইনি, তবে মিস্টারের উপর আমাদের সন্দেহ।”

ধামইরহাট থানার ওসি জাকিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনা সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেছি, অভিযোগ পেলে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, দখলকারীরা স্থানীয় ভূমি অফিসের মাধ্যমে না গিয়ে নিজেরা হঠাৎ একটি জমি দখল করাটা ঠিক করেনি, বিষয়টি নিয়ে এর আগেও দেন-দরবার হয়েছিল।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পিযুষ কান্তি কর্মকার বলেন, “জমির কাগজপত্র অনুযায়ী মিস্টার গং বৈধভাবে দখলে আছে, পক্ষান্তরে জবর-দখলকারী ভূমিহীন দাবি করে বিধি মোতাবেক আবেদন না করে উল্টো আইন অমান্য করে জমিতে অনুপ্রবেশ করে আইন ভঙ্গ করেছেন।” তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ করেনি দখলকারীরা।

Similar Posts

error: Content is protected !!