আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা নিকলীতে ঘরে তোলার ভর মওসুমেও জমির ধান কাটতে কৃষকদের মাঝে অনীহা বিরাজ করছে। শিলাবৃষ্টিতে ফসলহানি ও স্থানীয় শ্রমবাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
নিকলী উপজেলার সদর, কারাপাশা, পার্শ্ববর্তী উপজেলা কটিয়াদীর করগাঁও, করিমগঞ্জের গুনধর, কিশোরগঞ্জের মাথিয়া ইউনিয়নের অংশ নিয়ে বড় হাওর ঘুরে দেখা যায়, আগাম জাতের ব্রি-২৮ ধানী জমি কাটার শেষ সময়। ব্রি-২৯সহ হাইব্রিড ও দেশি জাতের ধান কাটারও পূর্ণ উপযুক্ত সময়। কিন্তু বেশিরভাগ জমিই আকাটা রয়ে গেছে। কৃষকদের মাঝেও ধান কাটার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
একই চিত্র নিকলী কারপাশার ছোট হাওর, দামপাড়ার খালকাটা, সিংপুরের বরাটিয়া, জাঙ্গালিয়া বড় হাওরসহ সুবিস্তৃত দীঘলা, মাটিকাটা, জোয়ানশাহী, পরানের চর, বড় জংলা, সাপমারি হাওরেও। জারইতলা, গুরুই ও সিংপুর ইউনিয়নের হাওরে পূর্ণোদ্যমে দাওয়া-মাড়াই চলছে।
কিছু জমি বিপদসীমায় দেখা গেলেও কাটা হয়নি। স্থানীয় কৃষকদের কাছে জমির ধান কাটা না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে নিকলী সদর জামতলা মোড়ের কৃষক আলাল বাদশা জানান, হাজার হাজার হেক্টর জমি নিয়ে জোয়ানশাহী হাওর। ৬ একর জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করি। থোড় বের হবার পর একদিনে দুইবার ভারি শিলাবৃষ্টি হয়। সাড়ে ৩শ’ মণের স্থলে ধান পেয়েছি ১২০ মণ।
নয়াহাটি গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টির কারণে ব্রি২৮-এর শতকরা ১০ ভাগ ধান রয়েছে জমিতে। ব্রি-২৯ জাতসহ অন্যান্য জাতের ধানেও চিটা হয়ে গেছে। বানিয়াহাটি গ্রামের কৃষক লেনিন মিয়া বলেন, ধার-কর্জের টাকায় চলিহাতী হাওরে ৩ একর জমিতে শুধু ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করেছিলাম। শ্রমিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় না করতে পারায় কাটিনি। এখন পরিবার নিয়ে শহরে বন্দরে যাবার পরিকল্পনায় আছি।
নতুন বাজার এলাকার কৃষক দিদারুল হক স্বাধীন বলেন, বর্তমান শ্রমিক দর ৭৫০ থেকে ৮শ’ টাকা। খাবার নিয়ে প্রায় ১ হাজার পড়বো। লোকসান গুনেও কিছু জমি কাটিয়েছি ডেমির (ধান গাছ কাটার পর গজানো ধান) আশায়। তাও ভাগ্য নির্ভর। যদি আগাম বন্যার শিকার না হই তবে পুষিয়ে উঠা যাবে।