মহসিন সাদেক, লাখাই (হবিগঞ্জ) ।।
প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ও উচ্চমূল্য শ্রমিক নিয়ে কৃষি ভাণ্ডার খ্যাত লাখাইর সোনালী মাঠে পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটা। এলাকার কৃষকরা কৃষিতে উদ্বৃত্ত উপজেলার প্রধান অর্থকরী এই বোরো ধানকেই বৈশাখী ফসল হিসাবে উৎপাদনে বেশি মনোযোগী। বছরের শুরুতে অতিঠাণ্ডা ও অতিগরমে ইনজুরি, ব্লাস্টরোগ ও ধানে চিটাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে প্রচণ্ড তাপদাহ সত্ত্বেও অনুকুল আবহাওয়া থাকায় কৃষকের কষ্টের ফলানো সোনালী ধান সময়মতো ঘরে তুলতে পেরে কৃষক অনেকটাই খুশি হলেও ধান কাটার শ্রমিকের প্রকট সংকট নতুন করে ম্লান করেছে কৃষকের মুখ।
বিগত বছরগুলোতে শ্রমিকমূল্য যেমনই হোক উত্তরাঞ্চল থেকে আগত শ্রমিকদের প্রাপ্তি ছিল প্রয়োজনীয়সংখ্যক যা এবছর একেবারেই শূন্যের কোটায়। এলাকা জুড়ে ধান মাড়াইয়ের সেই চিরচেনা দৃশ্য দেখা না গেলেও সর্বত্রই ধান ভাঙ্গানোর মেশিনের উচ্চ আওয়াজে মুখরিত এলাকা।
কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ব্লাস্টরোগ ও ধানের চিটা রোগে আক্রান্তের কারণে বিগত বছরের তুলনায় ধানের উৎপাদন কম সেই সাথে ফসল উৎপাদনে খরচ বেশি পড়েছে।
অপরদিকে ফসলের উৎপাদন ব্যয় ও উচ্চমূল্যে শ্রমিকের মজুরির সাথে ধানের বর্তমান বাজারদরে অনেক ব্যবধান থাকায় চরম হতাশা বিরাজ করছে তাদের মাঝে। বিশেষ করে বর্গাচাষী ও মহাজনী ঋণগ্রস্ত কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা বোরো জমি তৈরির শুরু থেকে চারা রোপন, সেচ, সার, কিটনাশক থেকে শুরু করে ধান কেটে মাড়াই শেষে গোলায় উঠানো পর্যন্ত যে ব্যয় হচ্ছে সেই ব্যয় কোনোভাবেই বর্তমান বাজারদরে ধান বিক্রির টাকায় উঠানো যাচ্ছে না।
এবছর ধানের রোগ দেখা দেয়ায় মাড়াই শেষে দেখা যাচ্ছে সারি ধানের সাথে চিটা ধানই একভাগ। ফলে লাভের চোখ দেখা তো দূরের কথা আসল উঠানোই দমাদম হবে। তবে উৎপাদন আর বাজারমূল্যে যাই হোক অনুকুল আবহাওয়া থাকায় অনেকটাই খুশি কৃষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলা জুড়ে এবছর বোরো মৌসুমে ৬টি ইউনিয়নে মোট ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বোরোসহ অধিকাংশ জমিতে ২৮/২৯ এবং হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।