ভৈরবে অপমান সইতে না পেরে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

বিয়েতে প্রেমিকের অস্বীকৃতি, পরে বখাটেদের নির্যাতন ও নিপীড়নের মুখে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় তানিয়া বেগম (২৩) নামে এক কলেজছাত্রী “আত্মহত্যা” করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল ২০১৯) দুপুরে উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামের বাড়ি থেকে তানিয়ার গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত তানিয়া মধ্যেরচর মীরবাড়ির মিলন মীরের মেয়ে। তিনি স্থানীয় জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা অনার্স কলেজের স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পড়াশোনার পাশাপাশি পৌর শহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার সাজেদা আলাল হাসপাতালে চাকরি করতেন তানিয়া। চাকরি করার সুবাধে সেখানকার ফার্মেসিতে কর্মরত একই উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে তানিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে প্রেমিক মিজানুর রহমান প্রেমিকা তানিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়িতে যান। বিষয়টি প্রতিবেশীদের নজরে পড়লে তারা মিজানকে আটক করেন। পরদিন শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে মিজানের অভিভাবকদের নিয়ে সালিশে বসেন প্রতিবেশীরা। বৈঠকে তানিয়ার অভিভাবকরা বিয়ে করতে চাপ সৃষ্টি করলে তাতে অস্বীকৃতি জানান মিজান। এসময় সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে কৌশলে মিজানকে ছেড়ে দেন সালিশকারীদের কয়েকজন।

এরপর থেকে এলাকার কয়েকজন বখাটে যুবক শুক্রবার দিনে ও রাতভর তানিয়াসহ পরিবারের লোকজনকে নানাভাবে অপমান করে। অশ্লীল কথা বলে এবং ঘরে ইটপাটকেল ছুড়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।

এক পর্যায়ে শনিবার সকালে বাড়িতে গিয়ে নানা রকমের অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে এবং তানিয়া ও তার মা শেফালি বেগমকে ঘর থেকে টেনে বের করে আনার চেষ্টা করে। এসব অপমান সহ্য করতে না পেরে বেলা ১১টার দিকে তানিয়া নিজ ঘরে আত্মহত্যা করেন। পরে খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

সূত্র : বাংলা নিউজ

Similar Posts

error: Content is protected !!