কিশোরগঞ্জে বহিষ্কৃত শিক্ষককে পুনর্বহাল নিয়ে উত্তেজনা

মো: আল আমিন, বিশেষ প্রতিনিধি (কিশোরগঞ্জ)
কিশোরগঞ্জের জেলা সরণি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত সহকারী গণিত শিক মোস্তফা কামাল পাঠানকে পুনর্বহালকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ওই শিক্ষককে পুনর্বহাল না করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে গত শনিবার বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে। গতকাল দুপুরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক ও সুশীল সমাজ।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক একই বিদ্যালয়ের গরিব মেধাবী এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে বিনাবেতনে প্রাইভেট পড়ানোর নামে নিয়মিত তার বাসায় যাতায়াত করতেন। আর্থিক দৈন্যতার সুযোগ নিয়ে একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিষয়টি এলাকাবাসী জেনে গেলে শুরু হয় তোলপাড়। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( এডিসি রাজস্ব) তপনচন্দ্র বণিকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে এডিসি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সাক্ষ্যপ্রমাণে ঘটনার সত্যতা পায়। পরে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। সম্প্রতি তিনি শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহলকে ম্যানেজ করে আবার বিদ্যালয়ে যোগদানের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
গতকাল জেলাপ্রশাসককে স্মারকলিপি দিতে যাওয়া বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোস্তফা কামাল পাঠান বিদ্যালয়ে আবার যোগদানের চেষ্টা করছেন এ খবরে এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। জেলা সরণি স্কুল ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নৈতিক স্খলনের দায়ে যে শিক্ষক বহিষ্কার হয়েছেন আমরা তার পুনর্বহাল চাই না।
বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা মুজিবুর রহমান ফরহাদ বলেন, ২০০৯ সালে আমি বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলাম। ওই শিক্ষকের ব্যাপারে যে তদন্ত কমিটি হয়েছিল এটারও সদস্য ছিলাম। আমরা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল তার সত্যতা পাই। পরে তাকে বহিষ্কার করার জন্য পরিচালনা কমিটির সবাই রেজুলেশন করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বরাবরে পাঠাই। এখন নতুন কমিটির লোকজন তাকে পুনর্বহালের চেষ্টা করছেন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আ শ ম শাহজাহান, বলেন, ওই শিক্ষকের পুনর্বহালের খবরে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা জীবন থাকতে ওই শিক্ষককে এ বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেবো না।

শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন

Similar Posts

error: Content is protected !!