আবু মুছা স্বপন, ধামইরহাট (নওগাঁ) ।।
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ৬নং জাহানপুর ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের কাছ থেকে পল্লীবিদ্যুৎ-এর নতুন সংযোগ দেয়ার নামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২০১৮ সাল থেকে শুরু করে দফায় দফায় এই টাকা চলতি বছরের বর্তমান পর্যন্ত আদায় হলেও এখনো অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখেননি ভুক্তভোগী পশ্চিম নানাইচ এলাকার ৪টি পাড়ার অধিবাসী। গ্রাহকদের কাছ থেকে পোল থেকে শুরু করে মিটার বাবদ ঘরপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দিয়েও কাজ না হওয়ার অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা।
ভুক্তভোগী কোকিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিশ পাহান অতিরিক্ত টাকা আদায় ও ৮ মাস অতিবাহিত হলেও সংযোগ না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পল্লীবিদ্যুৎ অফিস বরাবর অভিযোগপত্রে জানান, বর্তমান সরকার বিনা খরচে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু ৪ নং ওয়ার্ড-এর সাধারণ সম্পাদক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও পল্লীবিদ্যুতের লোকজন ৪ লক্ষাধিক টাকা আদায় করলেও ৮ মাসেও সংযোগ পাননি কেউ। তার পরিবারের কাছ থেকে ২৫শ’ টাকা নিয়েছেন মোয়াজ্জেম।
সম্প্রতি এই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বেগুনবাড়ি সবজি বাজারের পল্লী চিকিৎসক শ্রী রনজিত কুমার জানান, প্রথমে পোল (খুঁটি) বাবদ ১ হাজার টাকা, মিটার খরচ ১২০০ টাকা, ট্রান্সফর্মার বাবদ ৫শ’ করে টাকা বাড়িপ্রতি আদায় করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। পরে আরো কিছু অর্থ দাবি করলে একেকজনের কাছ থেকে আরও ৫শ’ টাকা উদ্বোধনের কথা বলে নানাভাবে অর্থ আদায় চলমান।
পশ্চিম নানাইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হক জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার গরমের তাপমাত্রা বেশি যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমত বিদ্যালয়ে এসে মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতে পারে না। বিদ্যালয়ে নতুন সংযোগটি প্রায় ৯ মাস থেকে হওয়ার কথা শুনে আসতেছি। দ্রুত সংযোগটি পেলে এলাকাবাসীসহ বিদ্যালয়ের সবারই উপকার হতো।
সরেজমিনে গেলে উৎপল তপন, মো. নজরুল, স্বপন ও ভাসানি আলমসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ট্রান্সফর্মার, মিটার বাবদ ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা করে ২শ’ পরিবারের নিকট আদায় করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। কিন্তু উনি একাধিকবার উদ্বোধনের প্রতিশ্রুতি দেখালেও বারবার ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আমি ২/১টি গ্রামের কিছু লোকজনের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের টাকা আদায়ে সহযোগিতা করেছি। ১২শ’ টাকা করে নিয়েছি। তবে হাজার হাজার টাকার কথা যেটি অভিযোগ হয়েছে তা ঠিক নয়।”
পল্লী বিদ্যুতের ধামইরহাট সাব-জোনাল অফিসের এজিএম হানিফ রেজা বলেন, “বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে এখন কোন ঘুষ দিতে হয় না। বোকা জনসাধারণ কেন তাদের প্রতিহত না করে ঘুষ দিয়ে সংযোগ না পেয়ে এতদিন পর আমাদের কাছে এলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”