ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি ।।
নওগাঁর ধামইরহাটে ৬নং জাহানপুর ইউনিয়নের কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের নামে প্রায় ৪২ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ূর রহমান অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের নামে বিভিন্ন জনের নিকট ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেছেন। সরকারি বিধি-বিধানকে তোয়াক্কা না করে কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক অফিস সহায়ক মো. ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে মো. ফারুক হোসেনকে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।
অভিযোগকারী ওই বিদ্যালয়ের সাবেক অফিস সহায়ক ফয়েজ উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার চাকুরি শেষে আমার ছেলে ফারুককে উক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করতে আমার কাছ থেকে ২০১৬ সালে ৬ লক্ষ টাকা নেন।
একই পদে মো. আতিকুর রহমানের নিকট ৯ লাখ টাকা গ্রহণ করার অভিযোগ উঠলেও বিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষক ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকার কথা স্বীকার করেন। এখানেই শেষ নয়, পিয়ন পদে আজিজুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ে দেড় বছর পারটাইম চাকুরি করেছেন ও স্থায়ী নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে প্রধান শিক্ষক মতিয়ুর রহমান আজিজুলের নিকট থেকে ৮ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন বলে আজিজুল অভিযোগ করেন। স্থানীয় আব্দুল হাই তার নাতীকে ওই পদে নিয়োগের জন্য ৫ লাখ টাকা দিয়েও নিয়োগ না দিলে প্রধান শিক্ষক মতিয়ুর রহমানকে মারপিট করে টাকা আদায় করে নিয়েছেন মর্মে আব্দুল হাই জানান।
এদিকে ওই বিদ্যালয়ের পিয়ন পদে পল্লী চিকিৎসক দৌলত আলীর নিকট ১৫ লাখ টাকা দাবী করলে তিনি নিয়োগ বাণিজ্যের কথা জানতে পেরে আর টাকা দেননি বলে জানান। এছাড়াও স্থানীয় আব্দুল মোমিনের নিকট থেকেও সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এতসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রধান শিক্ষক মতিয়ুর রহমান বলেন, আমি কোন টাকা নেয়নি, তাহলেও এতগুলো লোকজন কেন আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে এমন প্রশ্নে তার কোন জবাব প্রধান শিক্ষক দিতে পারেননি।
প্রধান শিক্ষক মতিয়ুর রহমান ও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নায়েক আলী ও বর্তমান সভাপতি যৌথভাবে এইসব টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগকারীদের অনেকেই দাবী করেন।
তবে বর্তমান বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কেএম মোস্তাফিজুর রহমান ফিরোজ বলেন, নিয়োগের বাণিজ্যের বিষয়ে টাকার নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন, এ রকম ঘটনা নিঃসন্দেহে গর্হিত অপরাধ, আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে তা প্রমাণ সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।