আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
পাকুন্দিয়ায় নারান্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামের হস্তক্ষেপে নিজেই বাল্য বিবাহ ঠেকিয়েছে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই ২০১৯) দুপুরে নারান্দী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক জরুরি সভায় ওই ছাত্রীর মা-বাবার মুচলেকা দেয়ার মধ্য দিয়ে বাল্যবিবাহটি বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, উপজেলার নারান্দী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে ঠিক করে তার পরিবার। বর একই উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের জাকির হোসেন। বুধবার (২৪ জুলাই ২০১৯) কিশোরগঞ্জ আদালতে তাদের এফিডেভিট এর দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু এখনই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চায় না ওই স্কুলছাত্রী। সে আরও পড়াশোনা করতে চায়।
তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার চেষ্টা হলে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই ২০১৯) সকালে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে স্কুলে চলে যায়। পরে জোরপূর্বক তাকে বাল্যবিবাহ দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা বদরুন্নেছার কাছে গিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা বদরুন্নেছা বিষয়টি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নারান্দী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে মুঠোফোনে অবগত করেন।
খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন এবং সকল শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠক থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসানকে বিষয়টি অবগত করে তার পরামর্শ অনুযায়ী ওই ছাত্রীর মা-বাবাকে স্কুলে ডেকে আনা হয়।
পরে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ওই স্কুলছাত্রীর বাবা-মা’কে বাল্যবিবাহের কুফল ও আইনি বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে জানান। এ সময় মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দেয়া হবে না বলে মুচলেকা দেয় ছাত্রীটির পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছাত্রীদের বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সচেতন এবং ওই ছাত্রীর মতো সাহসী হতে উৎসাহ দেন ইউপি চেয়ারম্যান। এ সময় ইউপি সচিব সালাহ উদ্দিন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা বদরুন্নেছা, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলামসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নারান্দী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম জানান, জোরপূর্বক ওই ছাত্রীকে কোর্ট ম্যারিজের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ দেয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। ছাত্রীটি খুবই সাহসী। সে আরও পড়াশোনা করতে চায়। বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানালে প্রধান শিক্ষক তাকে অবগত করেন। পরে স্কুলে ওই ছাত্রীর মা-বাবাকে ডেকে এনে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেকা দেয় মেয়েটির পরিবার।
সূত্র : কিশোরগঞ্জ নিউজ