মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছেলেধরা (কল্লা কাডনি) গুজব ছড়িয়ে মুবিন (১৯) নামের এক যুবককে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে পৌরসভার মাটিয়া মসজিদ এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাসকারী কিছু ব্যক্তি। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটার দিকে গুজব রটিয়ে এ ঘটনা সংগঠিত করে বলে প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ।
স্থানীয় কিছু লোকজন আহত যুবককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি দেখলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। দ্রুত খবর পেয়ে হাটহাজারী মডেল থানার অপারেশন অফিসার তৌহিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কাজল নামের এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যান। গুরুতর আহত মুবিন (১৯) উত্তর মিরের খীল খন্দকার পাড়ার আবদুস শুক্কুরের পুত্র। মুবিন চবি ২নং গেইট এলাকায় একটি মোটরসাইকেল শো-রুমে চাকরি করেন। সেখানে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী বরাতে জানা যায়, শুক্রবার রাতে মাটিয়া মসজিদ এলাকার পশ্চিমে পূর্ব চন্দ্রপুর রেললাইনে ঘুরাঘুরি করছিল। হঠাৎ কিছু লোক তাকে প্রথমে চোর বলে মারধর করে। সে দৌড়ে মাটিয়া মসজিদের পশ্চিমে জমির কলোনীতে ঢুকে একটি পুকুরের পানিতে ডুব দিয়ে আত্মগোপন করে। এদিকে হঠাৎ ওই লোকগুলো ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে দিলে প্রায় কলোনির নারী-পুরুষ সবাই লাঠি, দা, বটি নিয়ে বের হয়ে তাকে খুঁজতে থাকে।
এক পর্যায়ে পুকুরটির পারে জড়ো হওয়া কয়েকশত লোকজন সুর চিৎকার করলে সে পুকুর থেকে আবারো দৌড় দিলে অন্ধকারের মধ্যে তাকে আঘাত করে। সে প্রাণ রক্ষায় গুরুতর আহত হয়ে আব্বাছিয়ার পুলে এসে একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নেয়। এ অবস্থায় তার মাথায় জখম হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দ্রুত উদ্ধার করে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাঃ রিদুয়ার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। আহত মুবিন বমি করলে ও মাথায় অতিরিক্ত আঘাতের কারণে আশংকাজনক বলে তাকে চমেকে রেফার করেন।
এদিকে মডেল থানা অপারেশন অফিসার মোঃ তৌহিদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে এসে আহত যুবককে দেখেন। ঘটনার বিবরণে প্রতিবেদককে বলেন, যতটুকু জেনেছি গুজব ছড়িয়ে ছেলেটির উপর হামলা করেছে। তদন্ত করা হচ্ছে।
স্থানীয় হারুন, নাছির, জহির বলেন, ছেলেধরা বলে চিৎকার শুনলে আমরা দেখতে যাই। হঠাৎ মুবিনকে লাঠিসোটা নিয়ে গুরুতর আঘাত করলে আমরা থাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আর মাত্র কয়েক মিনিট মারধর করলে তার প্রাণ চলে যেত। গুজব রটিয়ে যারা এ অবস্থা করেছে তাদের কঠোর শাস্তি দিতে উপস্থিত উৎসুক জনতা দাবি জানান।
হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, গুজব ছড়িয়ে একটি ছেলেকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে বলে খবর পেয়েছি। তবে মোবাইল চুরির ঘটনায় তাকে মারধর করেছে। পুলিশ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।