আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
ঢাকা ডায়নামাইটসের সাকিব আল হাসান আগামী বিপিএলে দল পাল্টে রংপুরে যোগ দেয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আপনা-আপনি চলে আসছে। সাকিব তো ঢাকা ছেড়ে রংপুরে পাড়ি জমিয়েছেন। তাহলে রংপুরের মাশরাফি কোথায় যাবেন? রংপুরের আগের দু’বারের অধিনায়কের এবারের ঠিকানা কোথায়? এ দেশবরেণ্য ক্রিকেটার ও জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তাহলে কোথায় খেলবেন? তিনিও কি সাকিবের সাথে রংপুর রাইডার্সে থেকে যাবেন? নাকি অন্য কোনো ফ্রাঞ্চাইজি তাকে বেছে নেবে? কেউ কেউ এমন প্রশ্নও করছেন।
এ প্রশ্ন তোলার কারণও আছে। ইতিহাস জানাচ্ছে, বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের হয়ে মাশরাফি আর সাকিব একসাথে খেলেছিলেন। সেই দলে মোহাম্মদ আশরাফুলও ছিলেন। তবে সেটা এখন শুধুই ইতিহাস। বাস্তবে সে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটার সম্ভাবনা খুব কম। কারণ ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন, রংপুর যে সাকিবকে দলে ভেড়াবে, তা নাকি মাশরাফি জানতেনই না! অবাক করা বিষয়ই বটে।
মাশরাফি অবশ্য এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। কোনো মিডিয়ার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে রংপুরের আগের দু’বারের অধিনায়কের মুখ থেকে এ সম্পর্কে একটি আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্যও শোনা যায়নি। তবে মাশরাফির ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গেছে, রংপুর রাইডার্স যে সাকিবকে নেবে, তা সেভাবে জানতেন না মাশরাফি। তাকে সেভাবে কিছু না জানিয়েই সাকিবকে রংপুরের দলে ভেড়ানো হয়েছে।
রংপুর রাইডার্সের ফ্র্যাঞ্চাইজি বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে চুক্তি সই করার পর সাংবাদিকদের সাথে তাৎক্ষণিক কথোপকথনে মাশরাফি ইস্যু নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাকিবও। প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, আপনি তো রংপুরে যোগ দিলেন। তাহলে মাশরাফির ভবিষ্যৎ কি?
খানিক হতচকিৎ সাকিবের জবাব, “সিদ্ধান্তটা আসলে আমার নয়। এগুলো নিয়ে প্রশ্নের কিছু আছে বলে মনে হয় না।”
তারপরও বলা হলো আগে একসঙ্গে খেলেছেন সেজন্য এমনটা বলা। এ ব্যাপারে সাকিব বলেন, “সেটা আমি জানি না। সেটা দলের সিদ্ধান্ত।” পাশে বসে থাকা রংপুর রাইডার্সের চেয়ারম্যান মোস্তফা আজাদ মহিউদ্দীনও এমন কথা বলেননি বা আভাস ইঙ্গিতও দেননি যে, এবার সাকিব-মাশরাফি দু’জন একসঙ্গে রংপুরের হয়ে খেলবেন।
তার কথা, “বিপিএলে আইকন প্লেয়ারদের (আসলে এ প্লাস ক্যাটগরি) দল পরিবর্তনের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া আছে। ক্রিকেটাররা নিজেদের মতো করে নতুন বছরে দলবদলও করে। এর আগেও এমন তিনজন প্লেয়ার দল পরিবর্তন করেছে।”
মোস্তফা আজাদ মহিউদ্দীনের দাবি, “আমরা দুপক্ষ মিউচ্যুয়াল এগ্রিমেন্ট করেছি। আমরাও তাকে (সাকিবকে) চেয়েছি, সেও আমাদের সঙ্গে আসতে চেয়েছে।” তার মানে ধরেই নেয়া যায়, মাশরাফিকে না রাখার চিন্তা থেকেই সাকিবকে নেয়া। তাহলে দু’বার রংপুরে খেলা মাশরাফি এবার বিপিএলে কোথায় খেলবেন? এ নিয়ে আছে রাজ্যের সংশয়। কারণ আগের বারের এ প্লাস ক্যাটাগরির পাঁচ তারকা ক্রিকেটারের তিনজনের ঘর চূড়ান্ত।
নতুন ঘর বেছে নেয়া সাকিবের আগেই হেঁটেছেন মুশফিকুর রহীম আর তামিম ইকবাল। প্রসঙ্গত বিপিএল শুরুর চার মাসেরও বেশি সময় আগে এবার নতুন দল বেছে নিয়েছেন তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহীম। বলার অপেক্ষা রাখে না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স থেকে তামিম যোগ দিয়েছেন খুলনা টাইটান্সে। আর আগেরবার চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে খেলা মুশফিকুর রহীমের এবারের ঠিকানা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
সর্বশেষ ঢাকা ডায়নামাইটস থেকে সাকিব রংপুরে যোগ দেয়ায় এ প্লাস ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের মধ্যে মাশরাফি একা নন, মাহমুদউল্লাহও আপাতত দলশূন্য হয়ে গেলেন। তাদের আর এ প্লাস ক্যাটাগরিতে থেকে পুরনো দলে থাকার সুযোগ থাকলো না। এখন তাদের হয়ত নতুন শিবিরে যোগ দিতে হবে। না হয় এ ক্যাটাগরির পারফরমার হিসেবে পুরনো দলে থাকতে পারবেন।
এখন এ প্লাস ক্যাটাগরির ক্রিকেটার দলে নেয়ার সুযোগ থাকলো ঢাকা ডায়নামাইটস, রাজশাহী কিংস, চিটাগাং ভাইকিংস (আগেরবারের নাম) এবং সিলেট সিক্সার্সের। মাশরাফি আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ওই চার দলের যে কোনো দু’টির হয়েই খেলতে দেখা যেতে পারে। তবে ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন, মাশরাফিকে হয়ত আবার ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে।
সাকিব চলে যাচ্ছেন, আপনারা এ প্লাস ক্যাটাগরিতে কাকে নেবেন? সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে ঢাকার প্রধান নির্বাহী ওবায়েদ নিজাম বলেন, “আমি এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারবো না। তবে আমরা শিগগিরই সংবাদ সন্মেলন ডাকবো।”
ধারণা করা হচ্ছে, তার আগেই হয়ত মাশরাফির সাথে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে ঢাকা ডায়নামাইটসের।
সূত্র : জাগো নিউজ