মহসিন সাদেক, লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি ।।
শোক আর শ্রদ্ধায় গতকাল বুধবার হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কৃষ্ণপুরে পালিত হলো গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত “কৃষ্ণপুর” গ্রামের ১২৭জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ব্রাশফায়ার করে নির্মমভাবে হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী। এছাড়া সেদিন অনেক নারী হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের হাতে সম্ভ্রম হারান।
প্রতিবছরের মতো দিবসটি পালনের লক্ষে বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলার কৃষ্ণপুর কমলাময়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক অমরেন্দ্র লাল রায়ের সভাপতিত্বে ও গৌতম দাশের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার, মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার মোঃ আলী পাঠান, সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম তুহিন, লাখাই থানার ওসি এমরান হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথি গণহত্যায় নিহত শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও পুস্পস্তপক অর্পন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে ভোর থেকে বিকাল ৫টি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার পাক সেনা ক্যাম্প থেকে একটি স্পিডবোট ও ৮/১০টি বাওয়ালী নৌকায় ১০/১৫ জনের হানাদার বাহিনী ওই গ্রামে আসে। তাদের সাথে যোগ দেয় ৪০/৫০জনের একদল রাজাকার। আর তাদের পরামর্শে পাকাবাহিনী ওই গ্রামে তাণ্ডব চালায়। পাকবাহিনী এ সময় ১৩১জন পুরুষকে স্থানীয় কমলাময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে এবং বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় ও লুটপাট চালায়। এছাড়া গ্রামের নারীদের সম্ভ্রম হরন করে। এই হত্যাযজ্ঞ চলে বিকাল পর্যন্ত। হানাদারদের হাত থেকে বাঁচতে গ্রামের শতশত নারী পুরুষ ওই বিদ্যলয়ের পার্শ্বে পুকুরের কুচুরিপানার নিচে লুকিয়ে থাকে। এসময় হানাদারদের গুলি খেয়ে মরার ভান করে প্রাণে বেঁচে যায় অনেকেই।