কারপাশার শাসছুদ্দিন হত্যার ৫ মাস, ধরা পড়ছে না আসামিরা

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

কিশোরগঞ্জের নিকলীতে পাথরশ্রমিক শামছুদ্দিন ওরফে শামছু মিয়াকে (৫৫) ধরে নিয়ে প্রকাশ্যে ইট-পাথর ও ছুরিকাঘাতে হত্যার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার আসামিরা ধরা পড়েনি। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আবদুল লতিফ সালকারুম, তার বাবা নুর হোসেনসহ পাঁচ আসামি মামলার পর থেকে প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একপর্যায়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার শর্তে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে তিন সপ্তাহের জামিন নেন। ওই জামিনের মেয়াদও শেষ হয়েছে আড়াই মাস আগে। তার পরও পুলিশ তাদের ধরছে না। মামলার চার্জশিট দেওয়ারও কোনো খবর নেই। এ অবস্থায় মামলার তদন্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে নিহত শামছু মিয়ার পরিবার।

পূর্বশত্রুতা ও বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২৯ মে সকালে নিকলীর কারপাশা গ্রামের হতদরিদ্র পাথরশ্রমিক শামছু মিয়াকে গ্রামের সালকারুমের নেতৃত্বে আসামিরা বাড়ির সামনে থেকে অটোরিকশায় তুলে হাত-পা বেঁধে নিয়ে যায়। এক কিলোমিটার দূরে আবদুল হামিদ সড়কে নিয়ে লোকজনের সামনে তাকে বাটখারা, ইট দিয়ে আঘাতে আঘাতে থেঁতলে ফেলে ও ছুরিকাঘাত করে। একপর্যায়ে তারা শামছুকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন শামছু মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে দু’দিনের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় যুবলীগ নেতা আবদুল লতিফ সালকারুম, তার বাবা নুর হোসেন, মামা ইয়াছিন, খালু কডু মিয়া ও খালাতো ভাই মামুনকে আসামি করে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ গড়িমসি করে।

একপর্যায়ে ১১ জুন জাহাঙ্গীর আলম কিশোরগঞ্জের চতুর্থ আমলি আদালতে এজাহার দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন এজাহারটি দ্রুত এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে নিকলী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে এজাহারটি এফআইআর (মামলা নথিভুক্ত) হিসেবে গ্রহণ করলেও বাস্তবে পুলিশ এ নৃশংস হত্যা মামলাটি নিয়ে কাজ করছে না বলে মামলার বাদী জাহাঙ্গীরের অভিযোগ।

বাবার হত্যার বিচার নিয়ে সন্দিহান ছেলে জাহাঙ্গীর জানান, মামলার পর থেকে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করলেও বাড়িতে ঘুমালেও পুলিশ একবারও তাদের ধরতে অভিযান চালায়নি। আসামিদের অবস্থান বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলেও তাদের ধরছে না পুলিশ। ৫ মাস হয়ে গেলেও চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে না, বিচার তো দূরের কথা। তিনি এ মামলার তদন্ত র‌্যাব, ডিবি পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে করানোর দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নিকলী থানার ওসি শামসুল আলম সিদ্দিকী জানান, মামলাটির তদন্ত করছেন এসআই মিজানুর রহমান। গুরুত্ব দিয়েই মামলাটির তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত নন, এমন কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেটি মাথায় রেখে পুলিশ কাজ করছে।

 

সূত্র : সমকাল

Similar Posts

error: Content is protected !!