বাংলাদেশে অবিলম্বে আইন করে গরু জবাই বন্ধের দাবি জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা। শুক্রবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয় বলে জানিয়েছে একটি জাতীয় দৈনিক। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নজিরবিহীন নিপীড়ন চলছে এবং তাদের বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তির মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের অস্তিত্ব এখন সংকটাপন্ন। সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণ করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি টমাস দুলু রায়, সাধারণ সম্পাদক প্রদ্বীপ দাস, সদস্য সচিব প্রদ্বীপ মালাকার, পরিষদের ডিরেক্টর ও আমেরিকান হিন্দু ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট শ্যামল চক্রবর্তী, ঐক্য পরিষদের নেতা ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য, গৌরাঙ্গ কুণ্ডু, রূপকুমার ভৌমিক, প্রবীর রায়, রণবীর বড়ুয়া, প্রণবেন্দু চক্রবর্তী, অমিত চৌধুরী প্রমুখ। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে ঐক্য পরিষদের প্রেসিডেন্ট বিদ্যুৎ দাস।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এমনকি ২০০১ সালের চেয়েও অবস্থা অনেক খারাপ। সে সময় অন্তত মিডিয়ার কল্যাণে বিশ্ববাসী সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের খবর জানতে পেরেছিল। কিন্তু বর্তমানে ভয়ে সম্পাদক ও সংবাদকর্মীরা স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারছেন না। ফলে দেশের সর্বত্র সংখ্যালঘুদের উপর পরিচালিত নির্যাতন-নিপীড়নের খবরগুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে।
শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, অনেকে বলে থাকেন যে, বাংলাদেশি হিন্দুদের উপর নির্যাতন শুরু হয়েছে ১৯৭৫ সালের পর। কিন্তু কথাটা ঠিক নয়। বাস্তবে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা তথা হিন্দুদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও তাদের সম্পত্তি দখলের প্রবণতা শুরু হয় ১৯৭২ সাল থেকেই। সে সময় রমনা কালী মন্দির দখল করে পার্ক বানানো হয়েছিল। সেই মন্দির উদ্ধার করতে ৩০ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে গো-হত্যা চলছে এটা মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে আইন করে বাংলাদেশে গরু জবাই বন্ধের দাবি জানান তিনি।
শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, বিএনপি’র লোকেরা জিয়াউর রহমানকে শহীদ বলে থাকেন। কিন্তু জিয়া তো কোনো যুদ্ধে শহীদ হননি। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের অধিকার হরণ করেছেন। সুতরাং তাকে কিছুতেই শহীদ বলা যায় না। সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে পৃথক সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের জন্য পৃথক পৃথক বিশ্বাবিদ্যালয় চালু এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সকল বাঙালিকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।