খাইরুল মোমেন স্বপন, বিশেষ প্রতিনিধি ।।
কিশোরগঞ্জের নিকলীতে শনিবার (২৫ এপ্রিল) শামীম মিয়া (২৮) নামের এক পিতার বিরুদ্ধে শিশু কন্যা মায়মুনাকে (৯ মাস) হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কারপাশা ইউনিয়নের বাঘুয়াখালী গ্রামে। সন্ধ্যায় মায়মুনার লাশ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত শিশুর মা খায়রুন (২২) ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, শামীম মিয়া ও তার প্রথম স্ত্রী সেলিনার ঘরে ২ পুত্র সন্তান। মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সূত্রে শামীম মিয়ার সাথে কারপাশা গ্রামের খায়রুনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রথম স্বামীকে ছেড়ে প্রায় ২ বছর পূর্বে খায়রুন চলে আসে শামীম মিয়ার কাছে। দ্বিতীয় বিয়ের কারণে প্রথম স্ত্রী সেলিনার সাথে নিত্য কলহে দিনাতিপাত করে।
এর মাঝেই খায়রুনের গর্ভে আসে মায়মুনা। প্রথম স্ত্রীর চাপে শুরু থেকেই মায়মুনাকে পৃথিবীতে আনতে চায়নি শামীম। খায়রুনের একান্ত প্রচেষ্টায় পৃথিবীর মুখ দেখে মায়মুনা। শিশুটিকে নিয়ে চলে ত্রিভূজ চক্রান্ত। ২ মাস বয়সে পাষণ্ড পিতা ব্লেড দিয়ে মায়মুনার গুহ্যদ্বার ও যৌনাঙ্গ কেটে দেয়। চিকিৎসায় বেঁচে যায় শিশুটি।
স্থানীয়ভাবে দেন দরবারে আপোস করে দেয় এলাকাবাসি। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পারিবারিক কলহের জেরে শিশুটির মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে শামীম মিয়া। ঘটনার পর পরই নিকলী হাসপাতালে আনা হয় মায়মুনাকে। করোনার প্রভাবে সাময়িকভাবে নিকলী হাসপাতালটি লকডাউনে থাকায় স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করান মা খায়রুন। একই দিন রাত ১০টায় মায়মুনাকে শামীম মিয়ার কাছে রেখে প্রাকৃতিক ডাকে বাইরে যায় খায়রুন। ফিরে এসে শিশুটিকে মাটিতে পরে থাকতে দেখেন। শনিবার সকাল ১০টায় মায়মুনার মৃত্যু হয়।
খায়রুনের প্রতিবাদের মুখে শামীম মিয়া জোরপূর্বক মায়মুনার লাশ দাফন করতে চায়। এলাকাবাসি বাধ সাধে। নিকলী থানাকে ঘটনা অবহিত করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মায়মুনার লাশ উদ্ধার করে।
নিকলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. শামসুল আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পাওয়ামাত্রই লাশ থানায় আনা হয়। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করি। শামীম মিয়া পলাতক রয়েছে।