সংবাদদাতা ।।
নিকলীতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যস্ততা থেমে নেই। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কোমর বেঁধেই মাঠে নেমেছেন। গ্রাম-গঞ্জে, হাট-বাজারে, চায়ের দোকানে সর্বত্রই নির্বাচনী আলোচনা। এলাকার প্রবীণ থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে ১৩ মার্চ। প্রতিটি ইউনিয়নে তাদের একক প্রার্থী কাউন্সিলের মাধ্যমে মনোনীত করা হয়। নিকলী মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ ইসহাক ভূঞার সভাপতিত্বে আওয়ামীলীগের এক বর্ধিত সভার মাধ্যমে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নিকলী-বাজিতপুর নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, নিকলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিকলী উপজেলা চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম। ৭টির মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি, সম্পাদকদের ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। বাকি ২টিতে একাধিক প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়।
এদিকে, বিএনপি’র এখনো দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া তেমন চোখে পড়ার মতো নয়। প্রার্থী চূড়ান্ত করার বিষয়ে আজ কথা হয় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদের সাথে। দলীয় কাজে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন সম্পর্কে আমাদের নিকলীকে জানান, আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সাথে পর্যায়ক্রমে আলোচনা সভা করে যাচ্ছি। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। পর্যালোচনা শেষে আগামী সপ্তাহে বিএনপির দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নিকলীর ৭টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থীরা এরই মধ্যে প্রচারাভিযান শুরু করেছেন পূর্ণ উদ্দমে। ইউনিয়নভিত্তিক আওয়ামীলীগের পাশাপাশি সম্ভাব্য বিএনপি দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো।
১নং সিংপুর ইউনিয়ন : আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মোঃ জহিরুল ইসলাম, বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী আবদুর রব মেনু, হারুন অর রশিদ, সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মুক্তার উদ্দিন, স্বতন্ত্র মোঃ আমিনুল ইসলাম।
২নং দামপাড়া ইউনিয়ন : আওয়ামীলীগ মনোনীত উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আবু তাহের (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মানিক সওদাগর, স্বতন্ত্র বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাহাবুবুর রহমান, মোঃ লতিফুল হক কানন, মোঃ আহাম্মদ আলী (বর্তমান মেম্বার)।
৩নং কারপাশা ইউনিয়ন : আওয়ামীলীগ মনোনীত তকি আমান খাঁন, বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী মোঃ আশরাফ উদ্দিন, মোঃ মফিজ উদ্দিন, আঃ ওয়াদুদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলদার আহম্মেদ খাঁন পলাশ, গোলাম মোস্তফা।
৪নং নিকলী সদর : আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান কারার বুরহান উদ্দিন, বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী ডাঃ কফিল উদ্দিন, আক্তার হোসেন রাজা, মহি উদ্দিন, কারার ইকতার আহমেদ আরিফ, হারুন আল কাইয়ুম, সাজ্জাদ হোসেন স্বাধীন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আছমত আলী।
৫নং জারইতলা ইউনিয়ন : আওয়ামীলীগ মনোনীত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন আফরোজ, বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ রইছ উদ্দিন, আতিয়ার রহমান লিটন, শরাফত কামাল, মোঃ আলম মিয়া (বর্তমান মেম্বার), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ শাহ আলম।
৬নং গুরুই ইউনিয়ন : আওয়ামীলীগ মনোনীত মোঃ তোতা মিয়া, বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী মোঃ আবু তাহের (বয়লার), আবু তাহের, মোঃ সেলিম মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর।
৭নং ছাতিরচর ইউনিয়ন : আওয়ামীলীগ মনোনীত সাবেক চেয়ারম্যান বদরুল আলম চৌধুরী মানিক (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ ইসলাম, পরশ মাহমুদ, হায়দার আলী কাঞ্চন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ জামাল উদ্দিন (জামাল)।
বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্বাধীনতার পরবর্তী সময় ধরে এ উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নে একেকজন চেয়ারম্যান একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন। ব্যক্তি জনপ্রিয়তা ও পারিবারিক প্রভাবের কারণে সাধারণত এই উপজেলার জনগণ রাজনৈতিক সচেতন হলেও এখানে ব্যক্তি ও পারিবারিক ইমেজও যথেষ্ট কাজ করে।