কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা ।।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গত ১৪ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ-বিএনপি ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা চায়ের টেবিল পাড়া-মহল্লায় ও বাড়ি বাড়ি উপস্থিত হয়ে নিজ নিজ উদ্যোগে ভোটারদের মন গলানোর চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ নিজেদের পারিবারিক শক্তি, ব্যক্তি ইমেজ জানান দেয়ার চেষ্টা করছেন ভোটারদের মধ্যে। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ কড়া নাড়ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে সরকার দলীয় প্রার্থী আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা। থেমে নেই বিএনপিসহ অন্য প্রার্থীরাও।
উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ২য় পর্যায়ে আগামী ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদে ৪২জন প্রার্থী, সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০১জন ও ৩৩৭জন সাধারণ সদস্য সহ মোট ৪৮০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী ৯টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৯৪ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৬ হাজার ১৮জন এবং নারী ভোটার ৯৮ হাজার ৭৭৬জন। মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৮৪টি ।
১নং বনগ্রাম : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল হোসেন মিলন (নৌকা), বিএন পি প্রার্থী রুহুল আমীন প্রিন্স (ধানের শীষ), বাসদের প্রার্থী নজরুল ইসলাম(মই) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান (ঘোড়া) (আ’লীগ বিদ্রোহী)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৪জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৯জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ৪৭৩জন।
২নং সহশ্রাম ধূলদিয়া : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কাশেম আকন্দ (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মুখলেছুর রহমান বাবলু (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমর ফারুক তাসনিতা (ঘোড়া), মোঃ শাহজাহান মিয়া (আনারস) আ’লীগ বিদ্রোহী)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৪জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৭৬৯জন।
৩নং করগাঁও : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেলায়েত হোসেন বাদল (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী আব্দুল আলী (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী শরাফত লস্কর পারভেজ (আনারস) (বিএনপি বিদ্রোহী), মোঃ আব্দুল আলী (ঘোড়া) ও আব্দুল ছালাম বাচ্চু (মটর সাইকেল)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৮জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার ৩৩১জন।
৪নং চান্দুপুর : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বোরহান উদ্দিন খান (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ছাদেক হোসেন (ধানের শীষ),স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনসাফ আলী (ঘোড়া) ও মাহতাব উদ্দিন (আনারস)(বিএনপি বিদ্রোহী)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৩জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৭জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৩৪১জন।
০৫নং মুমুরদিয়া : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন ৪জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৈয়দুজ্জামান(নৌকা), বিএনপির প্রার্থী আলাউদ্দিন সাবেরী (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী ছেনু মিয়া (আনারস) (বিএনপি বিদ্রোহী), সাইফুল ইসলাম (ঘোড়া)(আ’লীগ বিদ্রোহী)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ৮জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ২৯৭জন।
০৬নং আচমিতা : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন। তারা হলেন-সদ্য যোগদানকৃত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু হানিফা(নৌকা), বিএনপির প্রার্থী মাহবুর রহমান বাচ্চু (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক শৈবাল (ঘোড়া) (আ’লীগ বিদ্রোহী), ওবায়দুল আকন্দ (মটর সাইকেল) ও হারুন অর রশিদ (আনারস)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ৮জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৬জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৪১জন।
০৭নং মসূয়া : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইদ্রিস আলী(নৌকা), বিএনপির প্রার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম বায়তুল (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ.কে.এম সামসু উদ্দিন (লাঙ্গল) স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন (মটর সাইকেল)(আ’লীগ বিদ্রোহী) আবু বকর ছিদ্দিক (আনারস) (বিএনপি বিদ্রোহী) ও আব্দুল কাদির (ঘোড়া)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১২জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৮জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৯৬৩জন।
০৯নং লোহাজুরী : এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতাহার উদ্দিন ভূঞা রতন (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী সাইফুল মতিন জুয়েল (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলনের সিরাজুল ইসলাম (হাতপাখা) স্বতন্ত্র প্রার্থী এ.কে.এম ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর (মটর সাইকেল) গোলাম হায়দার মারুয়া (আনারস)(বিএনপি বিদ্রোহী) ও খায়রুল আমীন রুহুল (ঘোড়া)(আ’লীগ বিদ্রোহী)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৫৫৭জন।
১০নং জালালপুর : ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪জন। জাপা থেকে সদ্য যোগদানকারী আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহনেওয়াজ ভূঞা শানু (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী রফিকুল আলম রফিক (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান রুস্তম (আনারস)(আ’লীগ বিদ্রোহী) ও মতিউর রহমান মাষ্টার (ঘোড়া)। তাছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৩জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ১২২জন।
নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সমন্বয়ক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে কোন প্রার্থী যাতে আচরণ বিধি লংঘন করতে না পারে বা সহিংসতা ঘটাতে না পারে এ জন্য উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারদের নিয়ে একটি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন গুলোতে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।