বীর বিক্রম মতিয়র রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বিশেষ প্রতিনিধি ।।

জাতির সূর্যসন্তান মরহুম মতিয়র রহমান বীর বিক্রমের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর ২০২৪) নিকলীতে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক আবীর, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ কফিল উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মানিক মিয়া, বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আতিকুল ইসলাম তালুকদার হেলিম, বিএনপি নেতা তাপস সাহা, সাত ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুর্শেদ আলী। অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন কামরুল হাসান ও আব্দুল মান্নান।

বক্তাদের মধ্যে সাংবাদিক আবু জামান খোকন তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, মতিউর রহমান বীর বিক্রমের স্মৃতি রক্ষার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিলো; যা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সকলের কাছে জোর দাবি জানান।

স্মৃতিচারণ করেন নিকলী গোরাচাঁদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কারার আব্দুর রশীদ। তিনি বলেন, জাতির এই বীর সন্তান শুধু বীর বিক্রমই নন, তিনি ও তাঁর সঙ্গী মুক্তিযোদ্ধাগণ দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, সেই লক্ষ্যে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি।

বক্তব্য দেন বীর বিক্রম মতিয়র রহমানের সহযোদ্ধা ও উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ কফিল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহের মধ্যে মতিউর রহমান বীর বিক্রম একজনই। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে গ্রহণ করা বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সকলকে জেগে উঠার আহ্বান জানান।

মতিউর রহমানের বন্ধু ও উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক আবীর তাঁর বক্তব্যে বলেন, বীর বিক্রম সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। তারপরও বর্তমান প্রজন্মকে তাঁর সম্পর্কে জানাতে হবে। মতিউর রহমান বীর বিক্রমের লেখা একটি বই রয়েছে। বইটির নাম “মুক্তিযুদ্ধে একজন বীর বিক্রম”। তিনি সংক্ষিপ্তভাবে যুদ্ধের অনেক কিছুই এই বইয়ে লিখে গেছেন। এই বইটি যারা পড়েননি, তাঁদের পড়ার জন্য আহ্বান করছি। একটি কমিটি গঠন করে বীর বিক্রমের স্মৃতি রক্ষার্থে দল-মত নির্বিশেষে সকলে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।

স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন জাতির সূর্যসন্তান বীর বিক্রম মতিয়র রহমানের একমাত্র ছেলে মুশফেকুর রহমান জোসেফ। তিনি বলেন, একজন বাবা, একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তিনি শুধু পরিবার নিয়েই নয়, সমাজের সবার জন্যই ভাবতেন। চেষ্টা করতেন। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন নিকলী উপজেলা জাসাসের আহ্বায়ক শেখ রানা, তাজবীর হোসেন প্রান্ত, আশিকুর রহমান আসাদ, সৈয়দ মাজেদুল হাসান পিয়াসসহ অনেকে।

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুর্শেদ আলী দীর্ঘ তেরো বছর পর খোলামেলা ভাবে নিকলী অডিটোরিয়ামে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে পারায় খুবই আনন্দ প্রকাশ করেন। উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

Similar Posts

error: Content is protected !!