ভৈরব টু কিশোরগঞ্জ : ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের নিয়ন্ত্রণে

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

ঢাকা বিভাগের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে ভৈরব। যেখানে আছে নৌপথ, স্থলপথ, রেলপথ, নদীবন্দর ও সকল মানুষের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ভৈরব বাজার। ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রামসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার জন্য ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনে আসেন ট্রেনযাত্রীরা। কিন্তু স্টেশন কাউন্টারে ট্রেনের টিকেট কাটতে এসে হতাশায় ভুগছেন ট্রেনযাত্রীরা। ট্রেনের টিকিট যেন এখন সোনার হরিণ।

প্রকাশ্য দিবালোকে ও রাত্রিকালীন সময়ে টিকিট কালোবাজারিরা নির্ধারিত দামের চেয়েও তিনগুণ বেশি দামে ট্রেনের টিকেট বিক্রি করছেন। নিরব রেলওয়ে জি,আর,পি থানার পুলিশ। ট্রেনযাত্রীরা স্টেশন কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে বাধ্য হয়ে টিকেট ক্রয় করতে হচ্ছে ব্লেকারদের কাছ থেকে। কারণ কখনও কোন দিনও স্টেশন কাউন্টারে টিকেট পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ ট্রেনযাত্রীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্টেশন কাউন্টারের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ব্লেকারদের সাথে আতাত করে প্রতি টিকেটে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি পেয়ে ট্রেনের সব টিকেট বিক্রি করে দিচ্ছে কালোবাজারিদের কাছে।

স্টেশন কাউন্টার টিকেট না পেয়ে এক ট্রেন যাত্রী হতাশা কন্ঠে বলে উঠলেন। ১৯৭১ সালে এই দেশ স্বাধীন হলেও আজ অবদি পর্যন্ত আমরা সাধারণ মানুষ মুক্ত হতে পারি নাই এদেশেরই কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছে থেকে। আমরা সাধারণ মানুষ সরকারের যে কোন ডিপার্টমেন্টই যাচ্ছি, সেখানেই লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত হচ্ছি আমাদের নাগরিক অধিকার থেকে, দেখার কেউ নেই। আমরা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হতে চাই বলে তিনি কেঁদে দিলেন।

এই চিত্র শুধু ভৈরব জংশনেই নয়, ভৈরব থেকে শুরু করে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত প্রতিটি স্টেশনেই চলছে এমন নৈরাজ্য। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, যাত্রীরা স্টেশন কাউন্টারে গিয়ে টিকিট চাইলে বলা হয় শেষ। কিন্তু পরক্ষণেই জানানো হয় যদি অতিরিক্ত কিছু টাকা দেন তবে “ম্যানেজ” করে দিতে পারবেন। এভাবে প্রায়শই ব্লেকারদের উপস্থিতি না থাকলেও টিকিটের দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীরা মূল্যের অতিরিক্ত টাকা বাগিয়ে নিচ্ছেন।

টিকিট না পেয়ে অনেক যাত্রী আছেন বিনা টিকিটেই চড়ে বসছেন ট্রেনে। এমন যাত্রীদের পূর্ণ ভরসা রয়েছে ট্রেনে টিকিট চেকারদের ওপর। যে গন্তব্যেই যান না কেন, টিকিটের পূর্ণ মূল্য অথবা অল্প কিছু টাকা চেকারদের পকেটে পুরলেই সব সমাধান। ট্রেনের ভেতরে ভাড়ার নামে যে লেনদেন হয় তার পুরোটাই চলে যায় রেলওয়ের অসাধু কর্মচারীদের পকেটে। সরকার এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দিলে হয়তো এই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করা সম্ভব হবে।

Similar Posts

error: Content is protected !!