আগাম পানিতে হাওরাঞ্চলে কৃষকেরা দিশেহারা

খালিয়াজুরী (নেত্রকোনা) সংবাদদাতা ।।

বিগত বছর শীলাবৃষ্টি ও আগাম বন্যায় ফসল বিনষ্ট হয়েছে। এবার চড়াসুদে ঋণ, হালের বলদ ও স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে বুকভরা আশা নিয়ে অনেক কৃষক জমিতে সোনালী ধান রোপন করেছিল। বিধিবাম! এবারো আগাম বন্যার হেয়ালীপনা। নেত্রকোনা জেলাধীন খালিয়াজুরী উপজেলাটি নিরেট হাওরাঞ্চল। আর কৃষিকে কেন্দ্র করেই এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা।

এ উপজেলায় রয়েছে বিশাল বিশাল হাওর। যেমন- ছায়া, বাইল্লা ও অহার হাওর। বিশেষ করে সুরমা নদীর কুল ঘেষে গড়ে ওঠা জনপদ কৃষ্ণপুর, কল্যাণপুর, কুতুবপুর, বেরী মুসলিমপুর, বেরী-দৌলতপুর, জাহেরপুর সহ অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকা উল্লেখিত হাওরগুলোতে। অন্যান্য বছরের মতো এবারো আগাম বন্যা এসে হানা দিয়েছে হাওর পাড়ের মানুষগুলোকে।

khaliajuri

সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী কূলবর্তী জমিগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। অতি বৃষ্টির ফলে হাওরের নিচু জমিগুলো পানির নিচে। চোখের সামনে সোনালী ধান তরতর করে রাক্ষসী অকাল বন্যায় গ্রাস করছে। কেউ নিজের হাতে রোপন করা জমিতে মুর্ছা যাচ্ছেন, কেউবা আবার নির্বাক চাহনিতে ডুবে যাওয়া দৃশ্য অবলোকন করছেন।

এমন দুর্গতির দিনে জমিতে অজ্ঞান হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করার ঘটনাও রয়েছে এ অঞ্চলে। কারণ এখানের সব জমিই একফসলি। বন্যায় নিয়ে গেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে, ভূলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে কিংবা টিটাগাং রোড বালি টানার কাজে যেতে হবে। অথচ প্রতিবছর হাওর উন্নয়ন বোর্ড লাখ লাখ টাকা অযথা অকাজে ব্যয় করছে। তারা সারা বছর কাজ করেনি। পানি যখন হানা দিয়েছে তখন কাজে নামছে। একদিক দিয়ে হাওরে পানি ঢুকছে অপরদিক দিয়ে হাওর উন্নয়ন বোর্ড মাটির প্রলেপ দিয়ে হাওর উন্নয়ন করছে।

কতিপয় সুবিধাভোগী জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আমলারা মিলে নামমাত্র কাজ করে সমস্ত টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা করে গলধঃকরণ করছেন। উক্ত পরিস্থিতি থেকে হাওরবাসী পরিত্রাণ চায়। সরকার যদি হাওরবাসীর প্রতি শুভদৃষ্টি না দেন বিপন্ন হতে পারে হাওর জনপদ।

Similar Posts

error: Content is protected !!