আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
হাওর জুড়ে হাহাকার করছেন কৃষক। আগাম বন্যায় এবার আধাপাকা কাটতে শুরু করেছিলেন। সেটুকুও আর এখন নিতে পারছেন না কৃষকেরা। ধানের জমি এখন বাকি সবই প্রায় ডুবে গেছে। সেই সাথে ডুবে গেছে পুরো বারো মাসের স্বপ্ন।
সেই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কৃষক রতন মিয়া বেছে নিয়েছেন আত্মহননের পথ। হতভাগ্য এই কৃষক রতন মিয়ার বাড়ি বাজিতপুরের হুমাইপুরে। রতন মিয়া (৩৬) এনজিও সুদের টাকা এনে ৬ একর জমি চাষ করেছিলেন। আগাম বন্যায় তলিয়ে যাওয়া একটি ধানের গোছাও তিনি কাটতে পারেননি। কোনো উপায় না পেয়ে ক্ষোভে, হতাশায় গত শুক্রবার কীটনাশক পান করে আত্মহনন করেন।
দিশেহারা হাওরের কৃষকদের স্বপ্ন তছনছ হয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি ঢলে। গত ৩ দিনে ধনু নদী আর ঘোড়াউত্রা নদীর পানির প্রবাহ বেশি বেড়ে গেছে। এরই মাঝে গত রোববার মধ্যরাতে নিকলীর সিংপুরের বড়বাধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় ৮০০ হেক্টর জমি। তারও আগে ইটনা উপজেলার দরবেশের খালের বাধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় হাজারো একর জমি। এভাবেই প্রতিদিন নতুন করে জমি তলিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলছে ধানকাটার দাওয়ালের চরম সংকট। ধানকাটা শ্রমিক পাওয়া গেলেও হয়তো পানির নিচ থেকে কিছুটা ধান কেটে আনা যেতো।
হাতে নগদ টাকাও নেই। ধারদেনা করে যোগাড় করলেও দিনে সাতশত থেকে আটশত টাকায়ও দাওয়াল মিলছে না। হতাশ তাকিয়ে ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় থাকছে না। সরেজমিনে হাওরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে কৃষকের দুঃখ-দুর্দশা দেখার পর তারা দাবি জানান, হাওরকে দুর্গত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হোক। কৃষিঋণ মওকুফ করে দেয়া হোক।