খলিলুর রহমান আকন্দ, শিবগঞ্জ (বগুড়া) ।।
বিয়ের চার বছর পেরিয়ে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছেন শিবগঞ্জের গৃহবধূ স্বপ্না। এখন তার নাম রাখা হয়েছে স্বপন। পূর্ণযুবতী স্বপ্নার প্রথম বিয়ে ফুফাতো ভাই জাহিদের সাথে। পরে ছাড়াছাড়ি হলে বিয়ে হয় দেলোয়ার নামে এক যুবকের সাথে। সেই স্বপ্নার শারীরিক পরিবর্তন ঘটে এখন হয়েছেন ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার কানুপুর মহল্লায় গত সোমবার রাতে। বিষয়টি লোকমুখে প্রচার হলে স্বপ্না তথা স্বপনকে একনজর দেখতে উৎসুক শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করছে তার বাড়িতে।
জানা গেছে, কানুপুর মহল্লার হতদরিদ্র কৃষক বুলু মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। এক মাস আগে হঠাৎ স্বপ্না তার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন টের পান। বিষয়টি স্বপ্না তার মাকে জানান। তবে লোকলজ্জার ভয়ে মা বিষয়টি গোপন রাখেন। একপর্যায় গত পয়লা মে রাতে স্বপ্নার শারীরিক গঠন পরিবর্তন হয়ে যায়। স্বপ্না বুঝতে পারেন তিনি আর মেয়ে নেই, ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছেন। সেই কারণে সারারাত আর দুই চোখে ঘুম আসেনি বলে জানালেন স্বপ্না। এর পর থেকেই তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সাথে পুরুষের মতো আচরণ করতে থাকেন এবং এখন চুল কেটে পুরুষের মতো চলাফেরা করছেন। তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে মো: স্বপন মিয়া।
স্বপনের বাবা বুলু মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ২০১২ সালে ফুফাতো ভাই জাহিদের সাথে প্রথম বিয়ে সম্পন্ন হলেও শারীরিক সমস্যার কারণে সংসার করেননি স্বপ্না। এতে হতদরিদ্র বাবা যুবতী মেয়েকে নিয়ে মহাবিপাকে পড়েন। স্বপ্নাকে অনেক বুঝিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে আবারো পাশে আলীয়ারহাট রামকান্দি গ্রামে দেলোয়ার হোসেনের সাথে বিয়ে দেন; কিন্তু বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় স্বপ্না তার বাবার বাড়ি ফিরে আসেন।
স্বপন মিয়া জানান, আমি এখন চাকরি করে বাবার সংসারের হাল ধরব। বিবাহ করে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চাই। আমার শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়টি ডাক্তারকে দেখানোর প্রয়োজন নেই। স্বপনের বাবা বলেন, মহান আল্লাহর কৃপায় আমার এখন দুই ছেলে, এক মেয়ে। আল্লাহ যা মনে করেছেন সেটাই আমার জন্য ভালো। এ জন্য সবার দোয়া চাই।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মুসা আল মানসুর বলেন, অনেক সময় হরমোনজনিত কারণে শারীরিক পরিবর্তন হতে পারে।
সূত্র : নয়া দিগন্ত, ৪ মে ২০১৬