নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
গিয়াস উদ্দিন। ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। নিকলী জি সি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর একজন গিয়াস। স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার হবার। কাঠমিস্ত্রি বাবার সামর্থ্যের বিচারে আপাত দৃষ্টিতে ছোট হয়ে আসছে এই মেধাবীর স্বপ্নের পরিধি।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্ব অর্জনকারী এই শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা এবং জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। নিকলী সদর ইউনিয়নের কুর্শা কিতাবহাটির গিয়াস উদ্দিনের বাবা জারু মিয়া পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ৪ মেয়ে, ২ ছেলের মধ্যে মেয়েদের ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে গিয়াস বড়। তার ছোট ভাই কুর্শা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
আর্থিক অনটনের সংসারে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে গিয়াসউদ্দিন তার বাবার কাজে নিয়মিত সহযোগিতা করে আসছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবার সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে উচ্চশিক্ষার আশা বেশিদূর গড়ানো সম্ভব হচ্ছে না তার। বাবা-মায়ের একান্ত অনুগত গিয়াস এখনই বেছে নিতে যাচ্ছে কম সময়ে উপার্জনক্ষম হয়ে ওঠার পথ। এজন্য কলেজে ভর্তি হওয়ার বদলে খোঁজ নিচ্ছে কোনো বিষয়ে ডিপ্লোমা করে ছোটখাটো চাকরি জোগাড় করা যায় কিনা। সে বুঝে গেছে, হাল ধরার দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে দ্রুততম সময়ে না দাঁড়ালে পরিবারটি পথে বসতে হবে।
পিএসসি ও জেএসসিতে ভালো ফলাফলের জন্য নিকলী জি সি পাইলট মডেল স্কুলে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পায়। সে সুবাদে কিছুটা কম বাধা মোকাবিলা করে এসএসসির সিঁড়ি পার হয়েছে। ছেলের উচ্চশিক্ষার বিষয়ে কথা হয় গিয়াসের বাবা জারু মিয়ার সাথে। তিনি জানালেন, “বসত ভিটাটা ছাড়া বলার তেমন কিছুই নেই আমার। সংসারের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের পর ছেলেকে কলেজে পড়ানোর মতো সামর্থ্য আমার নেই। চোখের সামনে ছেলেটার পড়াশোনা নিয়ে স্বপ্নটা ভেঙে যেতে চলেছে; তাও মেনে নিতে পারছি না।”
এমন পরিস্থিতিতে তিনি সমাজের সামর্থ্যবানদের কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি মেধাবী এই শিক্ষার্থীর পড়ালেখার খরচের দায়িত্ব নেন, তবে হয়তো গিয়াস উদ্দিনের স্বপ্নের পথে হাঁটার আরেকটা ধাপে পৌছতে সক্ষম হবে।
সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক এমন কেউ প্রাথমিক যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে ০১৬৭৫৫১২৩৬২।