বিশেষ প্রতিনিধি ।।
বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ফাহিম মুনয়েম বুধবার ১ জুন ভোর সোয়া ৬টার দিকে নিজের রাজধানীর গুলশানের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। সকালে তার স্বজন ও কর্মস্থল মাছরাঙা টেলিভিশনের কর্মকর্তারা এ খবর জানান। রাতে পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয় ফাহিম মুনয়েমের। ভোরে হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যু হয় তার।
সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলাধীন জারুইতলা ইউনিয়নের ধারীশ্বর গ্রামে। স্থানীয় সম্ভ্রান্ত পরিবারের (সৈয়দ বাড়ি) সন্তান ফাহিম মুনয়েম নিজ গ্রাম এবং লোকজনকে ভালোবাসতেন। তার মৃত্যুতে নিকলীর স্থানীয় বিশিষ্টজন ও বিভিন্ন সংগঠন শোক জানিয়েছেন।
স্থানীয় পর্যায়ে যারা শোক জানিয়েছেন
নিকলী জি সি পাইলট স্কুলের প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষক আবদুল জব্বার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কারার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইসহাক ভূঞা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদরুল মোমেন মিঠু, ঢাকাস্থ নিকলী সমিতি এবং নিকলীর প্রথম অনলাইন সংবাদমাধ্যম আমাদের নিকলী ডটকম।
ফাহিম মুনয়েম গুলশান ২ নম্বরের ৭৭ নম্বর রোডে ইউনাইটেড হাসপাতাল সংলগ্ন ৬ নম্বর বাসায় থাকছিলেন। খ্যাতিমান সাংবাদিক মরহুম সৈয়দ নুরুদ্দিনের ছেলে ফাহিম মুনয়েম মাছরাঙা টেলিভিশনের আগে কাজ করেছেন সংবাদ, মর্নিং সান, ইউএনবি এবং ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন মিডিয়া হাউসে। তিনি ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদের প্রেস সচিবের দায়িত্বও পালন করেন।
তার দুই ছেলে দেশে ফিরলে জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ২ জুন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী দুই ছেলে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তার এক ছেলে দেশে থাকলেও তিনি দুই ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। বর্তমানে সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের মরদেহ রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর শোক
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শোকবার্তায় ফাহিম মুনয়েমের দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, তার অকাল মৃত্যুতে দেশ একজন মেধাবী সাংবাদিককে হারালো। মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শোক
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সৈয়দ ফাহিম মুনয়েম সাংবাদিকতা জীবনে তার পেশায় রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সাংবাদিকতা জীবনে তিনি স্বাধীন সাংবাদিকতার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন কর্মনিষ্ঠ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে সবার কাছে অত্যন্ত সমাদৃত ছিলেন। ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও মুক্তমত প্রসারে তার ভূমিকার প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের শোক
জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য সাংবাদিক সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী। তাদের শোক বার্তায় বলেন, তার মৃত্যুতে জাতি একজন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যবস্থাপক ও বরেণ্য সাংবাদিককে হারালো।