জি আর শিপন, মহাস্থান (বগুড়া) সংবাদদাতা :
বগুড়ার মহাস্থানে ত্রীমোহনী উপজেলা গেট সংলগ্ন এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে প্রবেশের প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এখানে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয় বলে একাধিকবার প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপরও কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া মিলছে না।
সড়কে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে মহাস্থানগড়ে ভ্রমণে আসা পর্যটক, মাজার জিয়ারতকারী মুসল্লিরাও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ কারণে রাস্তার দু’পাশে শতশত ব্যবসায়ীর রুজির পথ বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, মহাস্থান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, আলিম মাদ্রাসা, মাহীসওয়ার ডিগ্রি কলেজ, দি মোর্নিং সান কেজি স্কুল, ইকরা মডেল কেজি স্কুল ও মোকবুল হোসেন আদর্শ কেজি স্কুল- উল্লেখ্য এ ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী সহজ ও নিরাপদ এই রাস্তাটি জলাবদ্ধতার কারণে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছে না। কখনো কখনো ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ চলাচলকারীদের দুর্ঘটনার শিকার হতে দেখা যায়।
অনেক সময় যাত্রাপথে পানিতে ভিজে কাউকে কাউকে গন্তব্যে না গিয়ে বাড়ির পথে ফিরতেও দেখা যায়। এতে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী মহল জানায়, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের মহাস্থান হাটের কাছ থেকে যে সড়কটি শিবগঞ্জ উপজেলার দিকে গেছে, সেটিই শিবগঞ্জ-মহাস্থানগড়ে প্রবেশের প্রধান সড়ক। ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়কে ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে প্রসিদ্ধ বাজার। এই বাজারের কাছের সড়কটির ৫০০ ফুট এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক এই সড়কটির চেয়ে অনেক উঁচু। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই মহাসড়ক থেকে ও মাজারের উঁচু স্থানগুলো গড়িয়ে শিবগঞ্জ-মহাস্থানগড় সড়কে এসে জমাটবদ্ধ হয়। রাস্তার পাশ দিয়ে তৎকালীন পানি নিস্কাশনের জন্য একটি ড্রেন নির্মাণ হলেও তা বর্তমানে অযত্ন অবহেলায় ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। ড্রেন দিয়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় এখানে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
একে তো সামান্য বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ডুবে দু’পাশে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়, তারপর আবার স্থানীয় একটি বরফ কলের দুটি পাইপ দিয়ে সর্বক্ষণ পানি ডেলিভারি হয়ে ওই রাস্তাতেই জমাট বাঁধে। বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক বৃষ্টি না হলেও ওই বরফ কলের পানিতে রাস্তাটি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন।
তাই ঈদের ভরা মৌসুমে এসেও ব্যবসায়ীরা রাস্তায় পানি জমাটের কারণে চরম বিপাকে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে বুধবার ২২ জুন সকাল সাড়ে ১০ টায় উল্লেখিত স্থানে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা প্রায় ১ ঘণ্টা বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। অবরোধের ফলে রাস্তার দু’পাশে শতশত দূরপাল্লার ভারি যানবাহন আটকা পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয় ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের। এরপর গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের একটি দল এসে অবরোধকারী ব্যবসায়ীদের ধাওয়া দিয়ে মহাসড়ক যানজট মুক্ত করে। পরে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা মহাস্থান-শিবগঞ্জ রাস্তাটি অবরোধের চেষ্টা করলে, শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান হাবিব ও সহকারী ভূমি অফিসার রাজিয়া সুলতানা ঘটনাস্থলে এসে ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নিয়ে স্থানীয় বরফ কলের মালিককে ৩ দিনের মধ্যে বরফ কলের পানি অন্যত্র সরানোর নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।