নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে এই মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সরকারের প্রতি রুল জারি করা হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার ৭ আগস্ট এ আদেশ দেন।
আদালতে ফজলুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সাথে ছিলেন এম মাসুদ রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির।
পরে আইনজীবী এম মাসুদ রানা বলেন, ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। তা ছাড়া তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা রাষ্ট্রদ্রোহের আওতায় পড়ে না। তাই আমরা মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন।
ফজলুর রহমান বিএনপির নবঘোষিত কমিটিতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি।
ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। প্রথম জীবনে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করলেও পরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ কিশোরগঞ্জের ইটনায় উপজেলায় এক নির্বাচনী জনসভার বক্তব্যে ফজলুর রহমান বলেন, খন্দকার মোশতাকের দল করতেন আবদুল হামিদ। তিনি এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন।
এই বক্তব্যের পর ওই দিনই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আলী হোসেন একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সে মামলায় ২০১৪ সালের ২১ জুন নিম্ন আদালত থেকে তদন্তের অনুমতি দেয়া হয়। একই বছরের ১৪ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে আমলে নেন আদালত। এই মামলায় চলতি বছর ১৩ জুলাই কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। দুই সপ্তাহ আগে এ মামলা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন ফজলুর রহমান। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার আদালত এ আদেশ দেন।