বিশেষ প্রতিনিধি ।।
কিশোরগঞ্জের নিকলীতে বাধা অমান্য করে সরকারি খাস পুকুর ভরাট ও তহশিলদার (ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কমিশনার)কে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। হুমকির শিকার নিকলী সদর ইউনিয়ন তহশিলদার আব্দুল গফুর বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম ও অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে উল্লেখ করে নিকলী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে দেখা যায়, নিকলী উপজেলা সদরের নিকলী মৌজার নাগারছিহাটি ও কৈবত হাটি গ্রামের মাঝের সরকারি পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। পুকুরের প্রায় ৮৮ শতাংশ ভূমিতে সরকারি সম্পত্তির সাইনবোর্ড ও লাল নিশান উপেক্ষা করে ১০/১২ জন লোক মাটি সমতলের কাজে ব্যস্ত। একজনকে ডেকে জিজ্ঞেস করতে তিনি জানান, পালানমূলে ভরাট করেছি। নাম জিজ্ঞেস করতেই এ প্রতিবেদকের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে কাজে মনোযোগী হন।
অন্য একজনকে ডাক দিলে তিনি কর্মরত অবস্থায় জানান, এটিই তো নিকলীতে প্রথম নয়। অন্তত ১০/১২টি ভালো ভালো পুকুরই শ্রেণি পরিবর্তন করে ভরাট করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। আমাদের ক্ষেত্রে যত আইন। নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি তহশিলদারকে জিজ্ঞেস করতে বলেন।
কয়েক গ্রামবাসী জানান, ভাই, এই পুকুরটি মূলত একটি খাল। কালক্রমে এখন পুকুর হলেও নদীর সাথে ড্রেনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি দিয়ে আশপাশে ৪/৫টি গ্রামের পানি ও ময়লা আবর্জনা নদীতে গিয়ে নামে। ভরাট হওয়ায় কয়েক হাজার পরিবার দুর্ভোগে পড়বে। এলাকাবাসী কেউ চায় না পুকুরটি ভরাট হোক।
তারা আরো জানান, ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকর্মী আছে যারা বালু উত্তোলনে ড্রেজার ও ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা ব্যবসার স্বার্থে শ্রেণি পরিবর্তন ও বালু ক্রয়কারীদের ইন্ধন দিয়ে থাকে।
নিকলী সদর ইউনিয়নের মহিলা সদস্য রুমা আক্তার বলেন, পুকুরটি আমার বাড়ির পাশে। এটি ভরাট হওয়ায় পুরো এলাকা দুর্গন্ধময় হয়ে উঠবে। আমি কেন ভরাটকারীদের সমর্থন করছি না এই জন্যে তারা আমার ওপরে ক্ষুব্ধ। নানা রকম মন্তব্যও করছে।
নিকলী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী অফিসার ও অভিযোগের বাদী আব্দুল গফুর অভিযোগ দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, কিছু লোক বালু দিয়ে ভরাট করে পুকুরটির শ্রেণি পরিবর্তন করছে খবর পেয়ে আমার অফিসের মিঠু কবিরসহ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে চলতি মাসের ১০ তারিখ ঘটনাস্থলে যাই। সরকারি সম্পত্তির সাইন বোর্ড ও বালু ফেলায় নিষেধাজ্ঞা স্বরূপ লাল পতাকা লাগাই। অভিযুক্তরা বাধা অমান্য করে এবং আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ১১ তারিখে অভিযোগ দায়ের করেছি।
নিকলী থানার ওসি মো. মুঈদ চৌধুরী জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।