নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
গত ১৫ নভেম্বর চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজ আয়োজিত ‘নবান্ন উৎসব-১৪২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বহুমাত্রিক লেখক কবি সাযযাদ কাদির বলেছেন, ‘নবান্ন উৎসব আমাদের আবহমান ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের লালন আমাদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করবে। আমাদের পূর্বপুরুষগণ অগ্রহায়নে নতুন চালের পিঠা-পায়েস তৈরি করে খেতেন। বলা যায় এটা লোকায়ত অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য। অগ্রহায়ন ছিল এক সময় বছরের প্রথম মাস। এ সময়ে বাংলার প্রকৃতিও থাকে শান্ত স্নিগ্ধ। প্রকৃতির প্রভাব মানুষের মধ্যে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র-শিক্ষকগণ ঢাকায় নবান্ন উৎসবের সূচনা করেন। সেই থেকে এটা একটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। ১৯৪৩ সালের মন্বন্তরের পর বিজন ভট্টাচার্য ‘নবান্ন’ নামে একটা নাটক রচনা করেন, যা আমাদের নাট্যধারাকে পাল্টে দিয়েছিল।
অধ্যক্ষ মকবুল আহাম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে কবি সাযযাদ কাদির আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজে এসে ভালো লাগল। সুন্দর একটি কলেজ, অনেক ছাত্র-ছাত্রী। পরিবেশ খুবই সুন্দর। অবশ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসা এটাই আমার প্রথম নয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য একাডেমি, কবি জয়দুল হোসেনের সুবাদে অনেকবার এসেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংস্কৃতি চর্চার জন্য সমৃদ্ধ অঞ্চল। সৃজনশীল সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি ও জঙ্গীবাদ দূর করা সম্ভব।
ব্রাহ্মবাড়িয়ায় অসাম্প্রদায়িক প্রগতি চেতনার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় প্রতি বছরের মতো এবারও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। নানা বর্ণের পোশাক পরে শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করে। সাংস্কৃতিক পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ এ কে এম শিবলী। আলোচনা করেন কবি মহিবুর রহিম, কবি নিল হাসান, আবদুল হান্নান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. আবদুল হাই। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করে মোস্তাকিম, ফারজানা আক্তার, ফারিয়া আক্তার, আফরিন ও সালমা আক্তার। সঙ্গীত পরিবেশন করে স্বর্ণা আক্তার, শাহিন মিয়া, শাহাবুল হোসেন ভূইয়া, মামুন, সজিব খন্দকার, রানা, মোস্তাকিম, ফারিয়া আক্তার ও ফারজানা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন প্রভাষক আলেয়া জাহান তৃপ্তি।
ছবি : কবি সাযযাদ কাদির-এর এফবি টাইমলাইন