মো. আরিফুল ইসলাম, বাজিতপুর প্রতিনিধি।।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশায় আলু ক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলায় পৌরশহরসহ ১১ ইউনিয়নের সব জায়গায় শীতকালীন ফসল আলু আবাদ উপযোগী না হলেও এবছর চরাঞ্চলের অনেক জমিতে চাষ করা হয়েছিল আলু। আর আলু গাছ বৃদ্ধির শেষ অবস্থায় লেট ব্লাইট বা কাণ্ডপঁচা রোগের ফলে আলু চাষীরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
কৃষকদের এ দুর্দশা দেখতে গিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার চোখে পড়ে, প্রায় অনেক আলু ক্ষেতেই লেট ব্লাইট রোগের আক্রমণের চিত্র। লেট ব্লাইট রোগের ফলে গাছের পাতা নিচের দিকে কুকড়ে পড়েছে, পাতায় পাতায় জলছাপ আকৃতির দাগ, পর্যায়ক্রমে জলছাপগুলো ধূসর বর্ণও ধারণ করছে। ক্রমান্বয়ে রোগটি আলুর গাছ ও কাণ্ডে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে করে গাছের কাণ্ড ঢলে পড়ছে। এক পর্যায়ে গাছগুলো কালো হয়ে মারা যাচ্ছে।
উপজেলার কয়েকটি মাঠ ঘুরে নষ্ট হয়ে যাওয়া জমিতে আনমনা অবস্থায় হাঁটার সময় সিদ্দিক আলী নামের একজন কৃষক জানান, এবার তিনি ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। আশা ছিল এবার তিনি অন্যান্য বছরের তুলনায় আলুতে ভালো ফসল পাবেন। প্রথম দফায় বীজ রোপনের পর অনাঙ্খাকিত বৃষ্টিতে বীজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় বীজ রোপন করেন। সময়মতো জমিতে সেচ ও কীটনাশকও দিয়েছেন। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার আগেই লেট ব্লাইট রোগে আলু গাছের কাণ্ড পঁচে যাচ্ছে।
সিদ্দিক আলীর মতো চরাঞ্চলের অনেক কৃষকের একই অবস্থা। জমি নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা তারা। আলু লাগিয়ে সময়মতো জমিতে পানি ও বালাইনাশক স্প্রে করার পর সতেজ হয়ে উঠতে থাকে আলু ক্ষেত। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই দেখা দেয় লেট ব্লাইট। এরপর বার বার কীটনাশক দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না জমির ফসল। আর এখন বাধ্য হয়ে পরিমাণ মত আলু না হতেই তুলে ফেলা হচ্ছে আলু গাছ। আর এতে কমে গেছে জমির প্রায় ৪০%-এর মত ফলন।
উপজেলা কৃষি বিভাগের মতে দিনে ও রাতে আবহাওয়ার তারতম্য ও ঘন কুয়াশার ফলে আলু ক্ষেতে লেট ব্লাইট বা কাণ্ড পঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি নয় বলে দাবি তাদের।