সারোয়ার আলম ।।
আলের পরে পথটি ধরে আলতা পরা পায়
ঘোমটা মাথায় লাজুক লতা এদিক ওদিক চায়
কোন গায়ে থাক কইন্যা, কোথায় তোমার বাড়ি
আমার কথার জবাব দিও নইলে কিন্তু আড়ি
সাঁঝের বেলায় ছুটছি তবু মায়ার পিছু পিছু
আধার নামতেই হারিয়ে গেলো, পেলাম না তো কিছু
দিনের পরে দিন কেটেছে মেঠো পথের বাঁকে
কত মানুষ এলো গেলো পাইনি খুঁজে তাকে
যারে খুজি মনের মধ্যে মনের অন্ধকারে
তারেই পেলাম গাও গেরামের মেঠো পথের ধারে
কৃষ্ণ হয়ে ঘুরেছিলাম জলের ঘাটে ঘাটে
রাখাল হয়ে ছুটেছিলাম সবুজ মাঠে মাঠে
আলের পরে আল ঘুরেছি কাঁচা ধানের ক্ষেতে
কোথাও তারে একনজরও পাইনি কোন মতে
ফিরব সেদিন ভাবছি শুধু চোখ ভিজেছে জলে
বুক ভেঙ্গেছে তুফান তোড়ে, পল্লীবালার ছলে
মন বলছে যাব যাব, মন বলছে না
শেষবারে আর একবার কী খুঁজতে পারি না?
সেদিন ছিল রথের মেলা পথে নামছি তাই
পথের মাঝেই পথ হরাল খুঁজে নাহি পাই
সাঁঝের বেলায় ঝুমঝুমি আর রিনিঝিনি সুর কানে
আমি তখন ফেরার পথে তাকাই পিছু পানে
চোখ জুড়িয়ে দেখছি শুধু, প্রাণ জুড়ালো প্রাণ
গাছে তখন গাইছে পাখি শেষ বেলাটার গান
পথের বাঁকে দাঁড়িয়েছিলাম কলির কৃষ্ণ বেশে
নীচু স্বরে জিজ্ঞাসিলাম মৃদু হেসে হেসে
কোথায় তোমার বাড়ি কইন্যা কোথায় থাক তুমি
তোমারেই তো খুজে মরছি, এ-ই তো আমি
তুমি যেন অনেক চেনা, কাছেই তুমি থাক
ইচ্ছে করেই কেন তবে দূরে দূরে রাখ
নিকশ কালো অন্ধকারে যাবে কোথায় একা
কাল কি তবে পথের বাঁকে আবার হবে দেখা
শিমুলতলীর মাঠে এসো কথা বলব কথা
মেঘের ছায়ায় ঘাসের কোলে জীর্ণ তরুলতা
বিছিয়ে দেব, বসবে তুমি, বলব কানে কানে
শহর, নগর, পথ পেরিয়ে এলাম তোমার টানে
কেন এত রাগ হয়েছে কিসের অভিমান,
এই তো সেদিন শুনিয়েছিলাম পাতা ঝরার গান,
গানে গানে ছন্দ ছিল, সুর ছিল না ভুলার,
এবার ফাগুন চলে গেছে আসবে তো আবার