আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলাকে জেলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ভৈরববাসীর দীর্ঘদিনের এই দাবি বাস্তবায়নে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান উদ্যোগ নিলেও নানা জটিলতায় তা সফল হয়নি। জিল্লুর রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে রাজধানীর বনানী করবস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এ বিষয়ে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভৈরবকে জেলা বানানোর প্রক্রিয়া চলছে, যা শুরু করেছিলেন জিল্লুর রহমান।’
জিল্লুর রহমানের ত্যাগের কথা বর্ণনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তার শূন্যতা এখনো আমাদের ভোগায়। তিনি ছিলেন দুর্দিনের কাণ্ডারি, আমাদের আদর্শ। দলের প্রাণভোমরা।’
এর আগে আওয়ামী লীগের পক্ষে সোমবার ২০ মার্চ সকালে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা জিল্লুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জিল্লুর রহমান ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে পাঁচটি পৃথক মেয়াদে ১২ বছর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০১৩ সালের ২০ মার্চ বার্ধক্যজনিত রোগে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জিল্লুর রহমান।
আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে।
ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়
খবরটি বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের পরপর কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মানুষের মাঝে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ভৈরব ছাড়া সম্ভাব্য অন্য যেসব উপজেলাকে এ আওতায় আনার প্রস্তাবনা এর আগে হয়েছিলো সেসব এলাকার মানুষজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। অঞ্চলবিশেষে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে চলছে এমন আলোচনা-সমালোচনা। এর মধ্যে নিকলী, বাজিতপুর ও কটিয়াদী উপজেলা উল্লেখযোগ্য। এসব অঞ্চলের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নিজেদের ওয়ালে মন্তব্য দিয়ে পোস্ট করছেন। পোস্ট ও কমেন্টকারী এসব এলাকার লোকজনের কারোরই ভৈরবকে জেলা হিসেবে মেনে নিতে আগ্রহ দেখা যায়নি। কেউ কেউ এমনও মন্তব্য করছেন, প্রয়োজনে হাওর জেলা ঘোষণা করা হোক। এসব উপজেলার যে কোনো একটিকে জেলা করা হলেও আমরা মেনে নিবো।
জানা যায়, ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর এক সমাবেশে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এক সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন ভৈরবকে জেলা করার। ভৈরব হাজী আসমত কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও ভৈরবকে জেলা করে যাবো।’’ “ভৈরবকে জেলা করার ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। প্রধানমন্ত্রীও ভৈরব জেলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।” তখন কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য উপজেলার মানুষজনের ব্যাপক প্রতিরোধ আন্দোলনের মুখে সেই প্রক্রিয়া থেমে যায়।
ওই দিনই জীবিত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ভৈরবে শেষ আগমন। এরপর তিনি আর ভৈরবে আসেননি। ‘ভৈরবকে জেলা না করতে পারাতেই তিনি আর আসেননি।’ এমন কথা বললেন ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভৈরব জেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব মো. সায়দুল্লা মিয়া।
সূত্র : ‘ভৈরবকে জেলা বানানোর প্রক্রিয়া চলছে’ (পরিবর্তন ডটকম)
রাষ্ট্রপতির স্বপ্ন ‘ভৈরব জেলা’ (বাংলানিউজ২৪)