নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলায় বুধবার ২২ মার্চ পপি-রিকলের প্রকল্প সমাপনী অভিজ্ঞতা ও শিখণ বিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিরউদ্দিন মাহামুদ-এর পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: সোহেল রানা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আক্তার, ছাতিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন, গুরই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মাইনউদ্দিন, ইউপি সদস্য ফিরোজা বেগম ও মো: শামছুল হক, সিবিও পর্যায়ের নারী আড্ডা দলের সদস্য, নারী ওয়াশ দলের সদস্য, সিবিও কার্যকরী কমিটির সদস্য, শিশু দলের সদস্য ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
কর্মশালার শুরুতেই পপি-রিকল প্রকল্পের দীর্ঘ ৭ বছরের কাজের বিভিন্ন চিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মোশারফ হোসেন খাঁন। বিগত ৭ বছরে যে সকল কার্যক্রম সিবিও পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার সফলতা, ব্যর্থতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।
উপকারভোগী সিবিও সদস্যগণ বিশেষ করে নারী আড্ডা দলের সদস্য, নারী ওয়াশ দলের সদস্য, সিবিও কার্যকরী কমিটির সদস্য, শিশু দলের সদস্যগণ তাদের জীবনের এবং নিজেদের এলাকার ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা শোনান। পপি-রিকল প্রকল্পের অবর্তমানে যাতে করে সিবিও-এর উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান থাকে তার জন্য সরকারি সেবাদানকারী দপ্তরগুলোর পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরগুলোতে রিকল প্রকল্প অনেক ভাল কাজ করেছে। বিশেষ করে নারীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য তারা অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন। রিকল প্রকল্প যে কাজ করেছে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সবাই মিলে আবার কাজ করতে হবে। রিকল প্রকল্প যাতে আবার এই এলাকায় কাজ করে তার চেষ্টা করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসিরউদ্দিন মাহামুদ-এর পক্ষে কমিশনার (ভূমি) মো: সোহেল রানা বলেন, রিকল প্রকল্প নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ও গুরই ইউনিয়নে অনেক উন্নয়ন ঘটিয়েছে যা আজ সিবিও সদস্যদের আলোচনায় জানতে পারলাম। আমি উপজেলা প্রশাসন থেকে সকল সময় সদস্যদের যে কোনো সহযোগিতা করবো বিশেষ করে বাল্যবিবাহ রোধে।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আক্তার বলেন, রিকল প্রকল্প নারীদের জীবনের অনেক পরিবর্তন করেছে। যে নারীরা ঘর থেকে বের হতো না তারা আজ সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
ছাতিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন বলেন, ছাতিরচর ইউনিয়ন একটি অবহেলিত ইউনিয়ন সেখানে বর্তমানে যে দিকেই তাকাবেন সেখানেই রিকল প্রকল্পের উন্নয়নমূলক কাজের নিদর্শন। তারা বাজার, রাস্তা, বসতভিটা উঁচুকরণ সহ স্বাস্থ্যসম্মত লেট্রিন, ডিপ টিউবওয়েল দিয়েছেন। নারীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথ দেখিয়েছেন। আমরা চাই তারা আরো কাজ করুক এবং আমাদের পাশে থাকুক।
নারী আড্ডা দলের সদস্য আইরিন বলেন, আমরা নারীরা আমাদের জীবনের যতটুকু পরিবর্তন ঘটিয়েছি সবটুকু পপি-রিকল প্রকল্পের অবদান। নারীরা এখন এমন একটা স্থানে এসে পৌছেছি যেখানে পরিবারের পাশাপাশি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও আমাদের সম্মান দেয় ও মূল্যায়ন করেন। আমাদের দাবি পপি-রিকল প্রকল্প আমাদের ইউনয়নে যাতে আরো কিছু বছর কাজ করে তাহলে কিছু অসমাপ্ত কাজ আমরা শেষ করতে পারবো। রিকল প্রকল্প না থাকলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা যেন সেবাগুলো পাই।
ইউপি সদস্য মোঃ মাইনউদ্দিন বলেন, আমরা রিকল প্রকল্পের সকল কাজের সাথে যুক্ত ছিলাম। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা সকল সময় সহযোগিতা করেছি। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব, সিবিও সদস্যদের সকল কাজে সহযোগিতা করবো, তাদের পাশে থাকবে।
আরো বক্তব্য রাখেন কার্যকরি কমিটির সদস্য, শিশু দলের সদস্য ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। কর্মশালা পরিচালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মোশারফ হোসেন খাঁন। সহযোগিতায় টেকনিক্যাল অফিসার রেশমা পারভীন।