পাড়দিয়াকুল (কটিয়াদি), প্রতিনিধি ।।
শুক্রবার ২৪ মার্চ দিবাগত রাত থেকে থেমে থেমে শনিবার পর্যন্ত চলা অকালীন কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে পাড়দিয়াকুল, দিয়াকুল, নখলা, বাঘজুরকান্দি, চমুকপুর এলাকার গাছপালা, ঘরবাড়ি, দোকানঘর। বিপর্যস্ত জনজীবন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁঠালের মোচা, আমের মুকুল ও ছোট ছোট আম। বড় বড় গাছ গুঁড়ি উপড়ে পড়ে গেছে। কোন কোনটির মাঝখান থেকেও ভেঙ্গে গেছে অকালীন কালবৈশাখীতে।
পাড়দিয়াকুল বাজারের আনন্দরাজ দোকানের মালিকের মাসুদ-এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার দোকানের চাল উড়িয়ে নিয়ে অনেক দূরের জমিতে ফেলে দিয়েছে এবং দোকানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোবাইল ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল মানুনের দোকানের ছাউনি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে নখলা ইসলামী কমপ্লেক্সের দেয়াল। আবুল ফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, পাড়দিয়াকুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চালের টিনের ছাউনির অবস্থাও খারাপ যে কোনো সময় উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।
সকাল বেলায় ঝড়ো হাওয়া শুরু হওয়ার সময় বড় হাওরে (পাড়দিয়াকুল, করগাঁও, লাহুন্দ, গচিহাটা, ধুলদিয়ার মাঝখানের হাওড়ের নাম) কান্দায় পাড়দিয়াকুল বেশ কয়েকজন গ্রামের কৃষক হাওরে ছোট একটা কুটিরে অবস্থানের সময় প্রবল বেগে ঝড় শুরু হলে তারা আতংকিত হয়ে যান। কৃষক রিয়াজ উদ্দিন টিটু, সৈয়দ আহমাদ্দুজ্জামান জামান, মাজু মিয়া, সুমন মিয়া ও পিয়ারু মিয়া ভাবছিলেন আজই কেয়ামত। বাড়িতে আত্মীয়-পরিজনের সাথে দেখা হবে কি না কিংবা বাড়িতে আসতে পারবেন কি-না এমনই সন্দেহ ছিল তাদের মনে।
বাগজুরকান্দি এলাকার ভূট্টা ক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। পাটক্ষেতে পানি জমে গেছে। ক্ষতি হয়েছে লাখ লাখ টাকা। টমেটো ও অন্যান্য সবজি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই চৈত্রের ঝড়ে কৃষকের মাথায় হাত।
পাট জমির দিকে তাকালে পুকুর মনে হয়। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হলেও পানি নিষ্কাশনের আগে পাট গাছ উঠে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে হয় না। শিলাবৃষ্টিতে ধানক্ষেতের বেশ ক্ষতিসাধন হয়েছে। তবে অন্য কোন ধরনের ক্ষতির কথা জানা যায়নি।
চারদিক চৈত্রের অকালীন পানিতে যেমন ভেসে গেছে ঠিক তেমনি শুকিয়ে যাওয়া নদী আবার প্রাণ ফিরে পেয়ে যৌবনা রূপ নিয়েছে। এলাকার সৌখিন মাছ শিকারীরা ঠাণ্ডায় মাছ শিকারে ব্যস্ত।