“যাদের টাকায় সংসার চলে, তাদের সেবা করুন।” “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বলেছিলেন। সেবা তো দূরে থাক, কৃষকের ভাত, স্বপ্ন সব কেড়ে নিল দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মচারি ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটল। গোলাভরা ধান নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল কৃষকের।
বৈশাখ মাস শেষে কৃষকের বাড়িতে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়েদের বিয়ের উৎসব হয়। কৃষকের উৎসব আর আনন্দের বলিদান হল। দায়ী ব্যক্তিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তদন্ত কমিশন হবে। আবার খাবারের সুযোগ হবে। পানির নিচের কাজ তো দেখার কেউ নেই। থাকলেও দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই। সবই অদৃশ্য অপশক্তির হাতে বন্দী।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন ও স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে (তথ্য সূত্রে প্রথম আলো)। হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্নগুলো হাওরে ভাসছে। উদিত হল দুদকের তদন্ত কমিটি। দুদক কোথায় ছিল এতদিন? অবশ্য দুদকতো দাঁত আর নখবিহীন বাঘ। মামলা করবে। হাইকোর্টে যাবে। সেই দীর্ঘশ্বাস। নতুন করে কৃষক স্বপ্ন বুনবে। দুদকের মামলা শেষ হবে না। নতুন আফসার উদ্দিন যোগদান করবে। পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে হাওরের বোরো ধান তলিয়ে যাবে।
ফসল রক্ষায় ৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে বাজেট আসবে। ভোগ করবে দুর্নীতিবাজরা। বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে হলে তো কাজের ভাগ-বাটোয়ারা কম হবে। পাগল কখনো বলে না আমি পাগল। দুর্নীতিবাজও কখনো স্বীকার করবে না সে দুর্নীতিবাজ। ২৫ কোটি টাকার দুর্নীতি বাংলাদেশের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করলো।
দুর্নীতির কালো ছোবল থেকে রক্ষা পেতে হলে জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করতে হবে। গণশুনানির ব্যবস্থা করতে হবে। তথ্যর অবাধ প্রবাহ রাখতে হবে। জনগণের কাছে তথ্য পৌছাতে হবে। এ দায়িত্বটা সরকারকেই নিতে হবে। দুদকের মামলার দীর্ঘতা না বাড়িয়ে বিচারবিভাগের উচিত অল্প সময়ের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করা।
লেখক : প্রবাসী, বুসান, দক্ষিণ কোরিয়া।