যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ বাংলাদেশির ১জন ভৈরবের

মোস্তাফিজ আমিন ।।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের অদূরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ভৈরবের আতাউর রহমান দুলাল (৩৭) ও গুরুতর আহত আল আমিন মোল্লার (৩৬) পরিবারে চলছে মাতম।

নিহত আতাউর রহমান দুলাল ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের জগমোহনপুর বড়বাড়ির শমসের আলীর ছেলে। তিনি সেখানে স্ত্রী আকলিমা খানম জেমীকে নিয়ে থাকতেন।

অপরদিকে গুরুতর আহত (লাইফ সাপোর্টে থাকা) মো. আল আমিন মোল্লা ভৈরব পৌর শহরের দক্ষিণ চণ্ডীবের এলাকার মোল্লা বাড়ির শওকত আলী মোল্লার ছেলে।

হতাহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সময় রোববার ১৪ মে ভোর পৌনে ৪টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে লংআইসল্যান্ডের সাউথদানস্ট্রেট পার্কওয়ের এক্সিট ৩১-এ তাদের বহনকারী গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে গাড়িতে থাকা চার বাংলাদেশির মধ্যে ভৈরবের আতাউর রহমান দুলাল, ময়মনসিংহ সদরের রায়হান ইসলাম, ঢাকার মাতুয়াইলের শামসুল আলম নিহত হন। গুরুতর আহত হন ভৈরবের আল আমিন মোল্লা।

নিহত ভৈরবের আতাউর রহমান দুলাল (বাঁয়ে) ও গুরুতর আহত আল আমিন মোল্লা। ছবি : সংগৃহীত

আতাউর রহমান দুলাল ২০১৪ সালে ভৈরব শহরের দক্ষিণ ভৈরবপুর এলাকার মতিউর রহমানের মেয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আকলিমা খানম জেমীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে তিনি স্ত্রীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

অপরদিকে আল আমিন মোল্লা ২০১০ সালের ডিভি লটারি ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যান। ২০১৪ সালে দেশে ছুটিতে এসে বিয়ে করেন আপন চাচাত বোন শামসুন্নাহার অমিকে। বিয়ের পর আবারও চলে যান কর্মস্থল যুক্তরাষ্ট্রে।

নিহত আতাউর রহমান দুলালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের বুক ফাটা মাতম চলছে। দলে দলে ছুটে আসছেন গ্রামের লোকজন। বাড়ির আঙিনায় মূর্তির মতো বসে আছেন বৃদ্ধা মা জাহেদা খাতুন। মুখে কোনো কথা নেই। পাশেই বসে আছেন বড় ভাই আবু তাহের মিয়া। তিনি জানান, তারা শেষবারের মতো দুলালের মুখখানি দেখতে চান। এটাই তাদের দাবি সবার কাছে।

এদিকে ভৈরব শহরের দক্ষিণ চণ্ডীবের এলাকার মোল্লা বাড়ির মরহুম শওকত আলী মোল্লার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, সবার হাতে তজবিহ। কায়মনে ফরিয়াদ করছেন আল্লাহর দরবারে। তাঁরা আহত আল আমিনের আরোগ্য চান। হায়াত চান। পরিবারের সদস্যদের সাথে তসবিহ হাতে শোকাহত স্ত্রী শামসুন্নাহার অমি। সংবাদকর্মীদের দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

আল আমিন মোল্লার বড় ভাই মোকাররম মোল্লা জানান, তারা প্রথমে শুনতে পান গাড়ি দুর্ঘটনায় আল আমিনও মারা গেছেন। এ কথা শুনে পরিবারের সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিন্তু আল্লাহর অসীম দয়ায় কিছু সময় পর আল আমিনের বেঁচে থাকা এবং লাইফ সাপোর্টে থাকার খবর পান। তিনি তার ভাইয়ের সুস্থ্যতা চেয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

সূত্র : যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ভৈরবের দুই পরিবারে শোক (এনটিভিবিডি, ১৪ মে ২০১৭)

Similar Posts

error: Content is protected !!