পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিতে বিশেষ অভিযান শুরু

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংরক্ষণে পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ-খুদ-কুড়া সহ মোট ১৭টি পণ্যের সংরক্ষণ এবং এসব পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে সোমবার ১৫ মে থেকে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ১৭টি পণ্যে শতভাগ পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। বাসস

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ কথা বলা হয়। এতে জানানো হয়েছে, সোমবার সারাদেশে জেলা নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ৭টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। এই অভিযানের সময় পণ্য সংরক্ষণ ও পরিবহনের ক্ষেত্রে পাটের বস্তা ব্যবহার না করায় মোট ৭০ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মশিউর রহমান। পাট অধিদপ্তরের পরিচালক লোকমান আহমদ (যুগ্ম সচিব) এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার সম্পর্কিত আইন বাস্তবায়নে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন।

এদিকে ব্যবসায়িরা এ আইনকে স্বাগত জানান। তারা ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনিসহ ১৭টি পণ্য সংরক্ষণ এবং এসব পণ্য স্থানান্তর ও পরিবহনে পাটের বস্তা ব্যবহারে তাদের সম্মতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। ৬টি (ছয়) পণ্য অর্থাৎ ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার ও চিনির ক্ষেত্রে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন অনুযায়ী নির্ধারিত। পরে ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি মরিচ, হলুদ, পেয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুড়া সহ মোট ১৭ (সতের)টি পণ্যের জন্য পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নির্ধারিত করা হয়েছে।

‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’র ধারা ১৪ অনুযায়ী পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। এ অপরাধ পুনঃসংগঠিত হলে সর্বোচ্চ দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডিত করারও ব্যবস্থা রয়েছে এ আইনে।

এর আগে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সার্বিক সহায়তায় সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই সময় সারাদেশে ১হাজার ৬০৮টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ১কোটি ৫১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ২ জনকে কারাদণ্ড প্রদান কার হয়। পরবর্তিতে গত বছরের জুলাই এ বছরের মার্চ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় দেশব্যাপি আবারো ৮৪৭টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ৭৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

আইনটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে প্রতিবছর ১০০ কোটি পাটের বস্তার চাহিদা সৃষ্টি হবে বলে পাট মন্ত্রণালয় আশাবাদী। এছাড়াও এ ব্যবস্থায় স্থানীয় বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, পাটচাষীরা পাটের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিশ্চিত হবে। সর্বোপরি পাটের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ পাটশিল্প এবং পরিবেশ উভয়ই রক্ষা পাবে বলে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!