আ’লীগ মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করে খাচ্ছে : অ্যাড. ফজলুর রহমান

মো: আল আমিন, কিশোরগঞ্জ ।।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করে খাচ্ছে। অথচ আওয়ামী লীগের ঘরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী লোকজন ও তাদের স্বজনেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, আমাদের দল আওয়ামী লীগ না। বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ দলেই মুক্তিযোদ্ধাদের ঠাঁই। স্বাধীনতাবিরোধী আত্মীয়-স্বজন নিয়ে শেখ হাসিনা দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে। ব্যাংক থেকে শুরু করে কৃষকের ফসল রক্ষা বাঁধ সবখানেই তারা লুটপাট করছে।’

নিকলীতে ত্রাণ বিতরণ করেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ

বুধবার ১৭ মে দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলীর হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের সময় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন। ফজলুর রহমান বলেন, ‘হাওর এলাকার মানুষের এই সময়ে গোলায় ধান তুলে উৎসব আমেজে থাকার কথা। ফসল হারিয়ে হাওরের কৃষক এখন নিঃস্ব। তারা এখন পথের ফকির। একবেলা খাবারের নিশ্চয়তা নেই তাদের। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানালেও শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার তা কর্ণপাত করছে না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকার চলে। অথচ জনগণের দুর্দশায় তারা আজ পাশে নেই। আর পাশে থাকবেই কী করে এ সরকার তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়।’

ফজলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘এই যে কৃষকদের আজকের এ অবস্থা এ জন্য সরকার সরাসরি দায়ী। কারণ বাঁধ নির্মাণে সরকারি লোকজনের লুটপাটের কারণেই হাওরে ফসলডুবির ঘটনা ঘটেছে। বাঁধ তলিয়ে লাখ লাখ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের এখন ত্রাণ দেয়া হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে তা এখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পেটে যাচ্ছে।’

হাওরের জলাশয়গুলোকে আগামী এক বছর পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে ভাসান পানিতে কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরার অধিকার এবং কৃষকদের কৃষিঋণ সম্পূর্ণ মওকুফেরও দাবি জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃষকদের অভিশাপ থেকে বাঁচতে হলে সুদের অর্ধেক মওকুফ করার তামাশা বাদ দিয়ে কৃষকদের কৃষিঋণ সম্পূর্ণ মওকুফ করতে হবে। নতুন করে সব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। যেন কৃষক নতুন করে ফসল ফলাতে পারে।’

নিকলী উপজেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুল মোমেন মিঠুর সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাঈল মিয়া, জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক খসরুজ্জামান শরীফ, বাজিতপুরের সাবেক মেয়র এহসান কুফিয়া, মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল আলম জাহাঙ্গীর, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, নিকলী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ, সহ-সভাপতি ডা. কফিল আহমেদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শফিকুল আলম রাজন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

নিকলীতে ত্রাণ বিতরণ করেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম তার বক্তৃতায় বলেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তাই তারা মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব করে না। মানুষের দুঃখ-দুর্দশাকে নিয়ে তারা ঠাট্টা-মশকরা করে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি সরকারে না থাকলেও আমাদের যতটুকু সামর্থ্য আছে, তাই নিয়েই আমরা হাওরের মানুষের পাশে এসেছি।

ত্রাণ বিতরণে সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারিকুজ্জামান পার্ণেল, যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু নাসের সুমন, মো. সাজ্জাদ হোসেনসহ জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে নেতৃবৃন্দ উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়নের ছাতিরচর নৌকাঘাটে ত্রাণ বিতরণ করেন। এসময় জেলা বিএনপি সভাপতি মো. শরীফুল আলম নদীভাঙ্গন থেকে গ্রামটি রক্ষার জন্য গ্রামবাসীদের ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। বিকালে হাওরের অপর উপজেলা অষ্টগ্রাম সদরের লঞ্চঘাট এলাকায় আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝেও তারা ত্রাণ বিতরণ করেন।

সূত্র : ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করে খাচ্ছে’ (নয়া দিগন্ত, ১৭ মে ২০১৭ অনলাইন)

Similar Posts

error: Content is protected !!