নিজস্ব প্রতিনিধি ।।
আকস্মিক ঝড়ো হাওয়ায় আজ শনিবার (২০ মে ২০১৭) দুপুরে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে নিকলী উপজেলার কয়েক গ্রামের স্বাভাবিক জীবন যাপন। কিছু ঘরবাড়ি, গাছপালা, গবাদিপশুর মৃত্যু, নৌদুর্ঘটনাসহ কয়েকজন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
কারপাশা ইউনিয়নের জালালপুর বাজার ও আশপাশের কিছু টিনের ঘর, গাছপালা উপড়ে পড়ে। এ সময় জালালপুরে স্থাপিত গ্রামীণফোনের একটি ছোট টাওয়ার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ঘাস খাওয়া অবস্থায় ঝড় শুরু হলে ক্ষেত থেকে হুড়োহুড়ি করে বাড়ি ফিরতে শুরু করে। দমকা হাওয়ায় গ্রামের এক বাড়ির মুরগির ঘর উড়ে গিয়ে গরুর ওপর পড়লে কিছুক্ষণ পর গরুটি মারা যায়।
মজলিশপুরের পশ্চিম দিকের হাওরে অবস্থিত পাহাড়খানের ভিটার পূর্ব দিকের ঘরটি হাওরের মাঝখানে উড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানান। বড়হাটি নামক গ্রামে বিরাট একটি গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়লে তাতে গাছের নিচে থাকা একজনের ঘর ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যায়। ঝড় শুরু হওয়ার পরপরই ঝড়ের তাণ্ডব দেখে সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যায়। ঘরে কেউ না থাকায় কোন মানুষজনের ক্ষতি হয়নি।
সদর ইউনিয়নের তেলিহাটির আব্দুরের ছেলে লাদেন (১৪) ঝড়ের সময় আম কুড়াতে যায়। দমকা হাওয়ায় চালের টিন এসে তার পেটে আঘাত করে। এতে তার পেট অনেকটাই কেটে যায়। তাড়াতাড়ি নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা বেশি ভালো না হওয়ায় ডাক্তাররা ভাগলপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু ক্ষয়ক্ষতির খণ্ড খণ্ড খবর জানা গেছে। গাছের ডালপালার আঘাতে অনেকেই আহত হয়েছেন; ঘরের চাল, বেড়ার আঘাতেও আহতের খবর শোনা গেছে।
এদিকে, মিঠামইন থেকে নিকলীর উদ্দেশে একটি ট্রলার রওয়ানা করে। এতে শিশু ও নারীসহ ৫০ থেকে ৬০ জনের মতো যাত্রী ছিলো। ছেড়ে আসার কিছুক্ষণ পরেই ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হয়। বাতাসের চাপে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণ হারালে অনেকেই ভয়ে ট্রলার থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়েন।
ট্রলারের মাঝি অবিনাশ জানান, কিছু সময়ের মধ্যেই দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি একটি ছোট চড়ে এসে আটকে যায়। তখন হুড়োহুড়ি করে সবাই ট্রলার থেকে নেমে পড়ে এবং পাশের পাট ক্ষেতের কাদামাটিতে আশ্রয় নেয়।
এ ঘটনায় কোনো যাত্রী নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়নি। শুধু যাত্রীদের সাথে থাকা কিছু মালামাল বৃষ্টির পানি ও কাদায় ভিজে যায়। পরে ঝড় কমে এলে যাত্রীদের নিয়ে ট্রলারটি নিকলীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে।