করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সুমন বরখাস্ত

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

বিএনপি থেকে নির্বাচিত কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ২৩ মে এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

সিনিয়র সহকারী সচিব লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এডিপি ও রাজস্ব তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম, নিজ দফতরে অনুপস্থিত এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগে দু’জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১১ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অনাস্থা দেন। এসব অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়। যাতে প্রস্তাবের পক্ষে ১৩ ভোট ও বিপক্ষে একটি ভোট পড়ে। অনাস্থা প্রস্তাব চার-পঞ্চমাংশের বেশি ভোটে গৃহীত হওয়ায় উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ [উপজেলা পরিষদ(সংশোধন) আইন, ২০১১ দ্বারা সংশোধিত] এর ১৩(ক) ধারার (১৩) উপধারা অনুসারে সাইফুল ইসলাম সুমনকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করে চেয়ারম্যান পদটি শূন্য ঘোষণা করা হলো।

এ প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ নির্বাচন কমিশনের সচিবের কাছেও পাঠানো হয়। তাতে নির্ধারিত সময়ে শূন্য আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করা হয়।

জানা গেছে, বিএনপি থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনের সাথে উপজেলা পরিষদ পরিচালনা নিয়ে দুই ভাইস চেয়ারম্যান, ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ সব কারণে প্রকল্পের তালিকা প্রণয়ন ও অনুমোদন না হওয়ায় এ বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি), টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া সাড়ে তিন কোটি টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

এ পরিস্থিতিতে গত ৯ মার্চ উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বিএনপি থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে ইউপি চেয়ারম্যানরা। গত ৮ ও ৯ মে ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ মুনির হোসেন সরেজমিন করিমগঞ্জে গিয়ে অনাস্থা বিষয়ে তদন্ত করেন। ৯ মে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান, দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও ১১ ইউপি সদস্যের অনাস্থার প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট নেন।

কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জহিরুল ইসলামের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, তদন্তের অংশ হিসেবে ৯ মে যে ভোটাভুটির আয়োজন হয় তাতে ১৪ ভোটের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পেয়েছেন মাত্র এক ভোট। ১৩ জনই উনার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্ত শেষ। এখন তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন পাঠাবেন। এরপর ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম সুমনের প্রতিক্রিয়া জানতে তার মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে তিনি তা ধরেননি।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাটি চলছিল। ইউপি চেয়াম্যানদের অসন্তোষ একপর্যায়ে অনাস্থায় রূপ নেয়। তারই প্রেক্ষাপটে তদন্ত শেষে তাকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

সূত্র : করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সুমন বরখাস্ত (বাংলা ট্রিবিউন, ২৪ মে ২০১৭)

Similar Posts

error: Content is protected !!