আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
এই দিনে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বিশ্ব। খেলার জগতে ‘অবিশ্বাস্য’ শব্দটা একটু মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হয়। তবে বিশ বছর আগে ৩ জুন সন্ধ্যায় আক্ষরিক অর্থেই অবিশ্বাস্য এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন রবার্তো কার্লোস। ফুটবলে তখন পর্যন্ত চেনাজানা জগতের বাইরে এমন এক গোল করেছিলেন, পদার্থবিদ্যার সূত্রগুলোও যেন সেদিন হার মেনে নিয়েছিল তাঁর কাছে।
খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল না সেটি। টুর্নোয় ডি ফ্রান্স নামের এক প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও ফ্রান্স। ম্যাচের ২১ মিনিটে ফ্রান্সের অর্ধে ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। গোলপোস্ট থেকে ৩৫ মিটার দূরের ফ্রি-কিক নিয়ে খুব একটা চিন্তিত ছিল না কেউ। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দৌড়ে এসে কার্লোসের শট নেওয়ার পরও না। কারণ সে শট যে বাঁক নিয়ে ছুটছিল গোলবারের অনেক বাইরে দিয়ে। মাঝপথেই হঠাৎ দিক বদলে গেল বলের। ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক ফ্যাবিয়েন বার্থেজকে স্তব্ধ করে সেই বলই জায়গা করে নিল জালে!
গোলটি হয়ে যাওয়ার পর তা বিশ্বাস হচ্ছিল না কার্লোসেরও। ফ্রান্সের খেলোয়াড়েরা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন মাঠে। এ কী করে সম্ভব! সে অবিশ্বাস এখনো তাড়া করছে সবাইকে। রবার্তো কার্লোস নিজেও যে জানেন না কীভাবে হয়েছে সে গোল, ‘সত্যি বলছি, আমার নিজেরও কোনো ধারণা নেই কীভাবে করেছিলাম। এটা খুব সুন্দর একটা গোল ছিল অনেক পরিশ্রম ও অনুশীলন করতে হয়েছে এর জন্য।’
এমন গোল যে সব সময় করা সম্ভব নয়, সেটা কার্লোস নিজেও ভালো জানতেন। এ জন্যই ওই কীর্তি আর কখনো করার চেষ্টা করেননি, ‘আমি আর কখনো এ চেষ্টা করেনি। কারণ জানতাম আমার দ্বারা এটা আর কখনো করা সম্ভব নয়।’ তবে কার্লোসের ধারণা, বর্তমানে অনেক খেলোয়াড়ের পক্ষেই এমন গোল করা সম্ভব। সে কারণেই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এমন গোল করতে পেরে গর্বিত তিনি, ‘বর্তমানে অনেকেই ভালো শট নিতে পারে। হয়তো সময় লাগবে, তবে কেউ না কেউ এমন গোল করবেই। কিন্তু আমিই সর্বপ্রথম থাকব।’
তবে বিজ্ঞান বলছে, এমন গোল আবারও দেখা খুব কঠিন। কার্লোসের ওই গোলের পর চমকে ওঠা বিজ্ঞানী মহল নতুন করে গবেষণা শুরু করে দিয়েছিলেন এই বিষয় নিয়ে। তাতে এ সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসে, গোল থেকে দূরত্ব, শটের গতি, বলের নির্দিষ্ট একটি স্থানে কার্লোসের পায়ের ছোঁয়া মিলিয়েই এমন একটা দৃশ্য সৃষ্টি হয়েছিল। প্রায় অলৌকিক ঘটনা বলা যায় একে, আবার কখনো এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা তাই খুবই কম। সূত্র : ইএসপিএন।
https://www.youtube.com/watch?v=3ECoR__tJNQ
সূত্র : এই দিনে বিশ্ব দেখেছিল অবিশ্বাস্য সেই ফ্রি-কিক (প্রথম আলো অনলাইন, ৩ জুন ২০১৭)