ভৈরবে দাফনের ৪২ দিন পর লাশ উত্তোলন

মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ ।।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দাফনের ৪২ দিন পর কবর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ১২ জুন সোমবার দুপুরে ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম প্রধান বিচারিক আদালতের নির্দেশে পৌর কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করে পুলিশ।

পারিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভৈরব পৌর এলাকার উত্তর ভৈরবপুর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে হাবিবুর রহমান (৪১) চট্টগ্রামে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসা করতেন। ব্যবসার সুবিধার্তে পরিবারকে সাথে নিয়ে তিনি চট্টগ্রামেই থাকতেন। চলতি বছরের ১ মে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসায়িক কাজে আন্তঃনগর মেঘনা ট্রেনের খ বগির ৪৪ নম্বর সিটে বসে চাঁদপুর যাচ্ছিলেন। পরে চট্টগ্রাম পুলিশের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় হাবিবুর রহমান ট্রেনে কাটা পরে মারা গেছেন।

ঘটনার পর থেকে দুই সপ্তাহ খোঁজখবর নিয়ে নিহতের ভাই অ্যাডভোকেট আয়ূব হোসেন হত্যার রহস্য উন্মোচন করে ১৭ মে চট্টগ্রাম বিচারিক আদালতে অভিযোগ করেন। অভিযোগে পুলিশের ১১ জন সদস্যসহ ১৯ জন মিলে তার ভাইয়ের ১৭ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ওই দিন মেঘনা ট্রেনটি সীতাকুণ্ডে পৌঁছালে ট্রেনে কর্তব্যরত রেলওয়ে পুলিশ যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে। এসময় হাবিবুর রহমানের ব্যাগে দেশি বিদেশি টাকা দেখে তাকে সিট থেকে তুলে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ তার টাকাভর্তি ব্যাগটি জোর করে নিয়ে যেতে চাইলে সে বাধা দেয়। তাকে পুলিশ পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বারবকুণ্ড এলাকায় ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন বলে পুলিশ প্রচার করে।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারিক আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই-এর পুলিশ পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৫ মে কবর থেকে লাশটি উত্তোলনের আদেশ দেয়া হয়। পরে ১২ জুন লাশটি উত্তোলন করা হয়।

এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) চিত্রা শিকারী, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, ভৈরব থানার এসআই আসাদুল হক আসাদ, মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আয়ূব হোসেনসহ পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Similar Posts

error: Content is protected !!