আমার প্রিয় মাতৃভূমি, সকল সম্ভাবনাময় দেশ। হাসি-কান্না মান-অভিমান আর ভালোবাসার দেশ। এখানে যেমন মীরজাফর ছিল, তেমনি দেশপ্রমিক মুক্তিযোদ্ধাও আছেন। দেশমাতার জন্য নিজের জীবন দিতে প্রস্তুত কোটি জনতা। পলাশী যুদ্ধে কিংবা মহান মুক্তিযুদ্ধে মীরজাফর ও রাজাকারদের পরিচয় পাওয়া গেছে। কিন্তু আমাদের স্বাধীন দেশকে ধ্বংস করছে আমাদের দায়িত্বহীনতা।
আমাদের দায়িত্বহীনতার জন্যই আমাদের দোষ অন্যর ওপর চাপাতে দ্বিধাবোধ করি না। এটা করি বিধায় আমরা উত্তম। আসলেই কি উত্তম? কথাগুলোর মূল কারণ হল ঢাকা শহরের চিকগুনিয়া রোগ ও জলাবদ্ধতা। দায়ে মেয়রদের লালকার্ড দেখাচ্ছে কিছু জনতা। প্রশ্ন হলো এ দায় কি শুধু তাদের নাকি আমাদেরও?
ভালো কাজ করলে মেয়র আনিসুর রহমান বা সাঈদকে নিয়ে নাচবো। আর সকল ব্যর্থতা তাদের! আমাদের কোনো ব্যর্থতা নেই! মেয়রদের তো কোটি হাত। তাদের হাতে সোনার কাঠি ও রুপার কাঠি আছে। মুহূর্তেই সকল সমস্যা সমাধান। তাই না। তাই তো আমরা মনে করি। আমাদের কিছুই করার নাই?
কিন্তু আমরা ভুল। যানজট নিরসনে প্রশাসন তো কাজ করছে। আমরা কি করছি? ফুট ওভারব্রিজ রেখে রাস্তা দিয়েই পারাপার করছি। সবুজ সংকেত থাকা সত্ত্বেও ছোটমনিসহ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছি। বাসায় গিয়ে সন্তানকে শিখাচ্ছি রাস্তা পারাপারের জন্য সবুজ সংকেত দেখে জেব্রা ক্রসিং পার হতে হয়।
এটাতো মেয়রদের দায়! নোংরা আবর্জনা, পানীয় বোতল, পলিথিন এগুলো যেখানে সেখানে রেখে দেয়া। এগুলো আমাদের দায়িত্ব। তাহলে তো ড্রেনেজ প্রক্রিয়া ভালো থাকবে। রাস্তায় সাঁতার কাটা যাবে। এর দায়ভার তো মেয়রদের। কারণ মেয়র আনিসুর রহমান তো পাপ করেছিল যে ৬১ লাখ টাকা খরচ করে মহানগরের বিভিন্ন জায়গায় ১০০০ ডাস্টবিন স্থাপন করেছে। এডিস মশা তৈরির কারখানা তো মেয়ররা বাসায় স্থাপন করছে।
মেয়রদের তো কোন দায়িত্বজ্ঞান নেই। দায়িত্বজ্ঞান থাকলে সকল বাসার এসি, গাড়ির টায়ার, বাসার নোংরা আবর্জনা সবই পরিস্কার করে ড্রেনে রাখত! যে ব্যক্তিগুলো গ্রীন সিটি করার চেষ্টা করছেন তাদেরকে লালকার্ড দেখাচ্ছেন। আগে নিজেকে লালকার্ড দেখান। তারপর এদেরকে লালকার্ড দেখান। ঢাকার সমস্যা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। তাই এর সমাধান একদিনে সম্ভব নয়। আগে আমি ও আপনি সংশোধন হই। তাহলে সবই ইতিবাচক হবে। যে ভালো কাজ করছে তাকে সরাসরি সহায়তা করতে না পারলে দয়া করে নিরুৎসাহিত করবেন না। আমরা ভুলে গেছি শূন্য থেকেই সকল সংখ্যার উৎপত্তি। লালকার্ড নয়, নিজের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হই, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি।
লেখক : প্রবাসী, বুসান, দক্ষিণ কোরিয়া